জাতীয়
উত্তরাধিকার বলে মামার পর ‘ভাগ্নে’ও এখন চিকিৎসক !
Published
2 years agoon
পাস করে নয়, আবার ট্রেনিং নিয়েও নয়। চট্টগ্রাম নগরীজুড়ে অন্তত শতাধিক ‘দাঁতের ডাক্তার’ আছেন, যারা ‘ডাক্তার’ সেজে বসেছেন উত্তরাধিকার সূত্রে কিংবা ‘দেখে দেখে’। মুদি দোকানের কর্মচারী কিংবা ক্লিনিকের পিয়ন যেমন দেখে দেখে ‘ডাক্তার’ বনে গেছেন, তেমনি ‘ডাক্তার’ দাদার চেয়ারে এখন নাতনিই ডাক্তার সেজে বসছেন, বাবার পর ছেলে নিয়েছেন ‘ডাক্তারির’ গুরুদায়িত্ব। পারিবারিক এই অদ্ভূত চিকিৎসা-ব্যবসায় মামার চেম্বারে ভাগ্নে, চাচার ক্লিনিকে ভাতিজাই রীতিমতো ডাক্তার বনে ‘দাঁতের চিকিৎসা’ দিয়ে চলেছেন।
এদের বেশিরভাগই পারিবারিক সম্পর্কের সূত্র ধরে এখন ‘দন্ত চিকিৎসক’— সাধারণভাবে ‘ডেন্টিস্ট’ হিসেবেই পরিচিতি তাদের। একই পরিবার থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে আসা এসব ‘ডেন্টিস্ট’ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে করে যাচ্ছেন দন্তচিকিৎসার রমরমা ব্যবসা। চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘি, পতেঙ্গা, ইপিজেড, আগ্রাবাদ, চকবাজার, মুরাদপুর, জামালখানসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এরকম বহু কথিত ডেন্টিস্টের খোঁজ মিলেছে— চিকিৎসার নামে যারা দাঁতের রোগীদের পকেট কাটছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এদের বেশিরভাগেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা বড়জোর এসএসসি। কয়েকজন আছেন এইচএসসি পাশ। অনেকে আবার স্কুলের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। কিন্তু তারাই ‘দাঁতের ডাক্তার’ সেজে নগরীতে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এদের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে দাঁতের চিকিৎসা করাতে এসে সহজ-সরল অনেক মানুষ ট্রান্সমিশন ডিজিসের শিকার হয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন হেপাটাইসিস বি ও সি-তে।
দাদার চেম্বারে নাতনিই ‘ডেন্টিস্ট’
নগরীর লালদিঘি জেবি টাওয়ারের সরু গলির মধ্যে দোকান সাজিয়ে বসেছে ‘সুমন ডেন্টাল ক্লিনিক’। ছোট দুটি ঘরের একটিতে রোগী বসার জায়গা। অন্যটিতে রোগী দেখেন সুপ্রিয়া দেবী। তিনি সুমন ডেন্টাল ক্লিনিক মালিক সুমনের নাতনি। এইচএসসি পাস করার পর ফিরিঙ্গিবাজারের ইনস্টিটিউট অফ হেলথ টেকনোলজির অধীনে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স শেষে তিনি এখন দাঁতের চিকিৎসা দিচ্ছেন। সুপ্রিয়া দেবীর সহকারী টিনা চৌধুরী। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা তার। দাঁত বাঁধানো, ক্যাপ, ব্রিজ, ক্যাপল, স্ক্যানিং, ফিলিংসহ আকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসা করা হয় সুমন ডেন্টাল ক্লিনিকে— জানান সুপ্রিয়া দেবী।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ওই ‘ডেন্টাল ক্লিনিকে’ গিয়ে দেখা গেল, আজাদ নামে একজন এসেছেন দাঁতের রুট ক্যানেল করাতে। সুপ্রিয়া দেবী জানান, রুট ক্যানেলে খরচ পড়ে প্রথমে ৩ হাজার টাকা। এটি করতে রোগীকে ৪ থেকে ৫ বার আসতে হয়। প্রথমে দাঁত ওপেন বা খোলা, তিনদিন পর ড্রেসিং, দ্বিতীয় বার এক্সরে করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে রোগীদের ড্রেসিং, ক্যালসিয়াম ড্রেসিং, অ্যান্টিবায়েটিক ড্রেসিং দেওয়া হয়। তারপর রোগীর দাঁতে পরানো হয় ক্যাপ।
মুদি দোকানের চাকরি ছেড়ে ‘ডেন্টাল ক্লিনিক’
লালদিঘিতেই শুধু নয়, নগরীর অন্য জায়গাতেও আছে এমন দন্তচিকিৎসকের উপদ্রব। নগরীর আগ্রাবাদের চৌমুহনী ‘শেফা ডেন্টাল কেয়ারে’ দাঁতের চিকিৎসা দেন কামাল হোসেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী। তিনি আগে কর্ণফুলী মার্কেটে মুদি দোকানে সাড়ে চার হাজার টাকার বেতনে চাকরি করতেন তিনি। ওই মুদি দোকানের মালিকের মেয়ে জামাইয়ের ডেন্টাল ক্লিনিক ছিল লালদিঘিতে। ১৫-১৬ বছর আগে পরিচয়ের সেই সূত্র ধরে ওই ক্লিনিকে তার আসা-যাওয়া। সেখানে কিছুদিন হাতেকলমে শিখে তিনি চৌমুহনীতে ‘শেফা ডেন্টাল কেয়ার’ নামের ক্লিনিক খুলে বসেন। এখন তিনি দাঁত তোলা, বাধাই ও স্কেলিং ও ফিলিংয়ের কাজ করে থাকেন। তার ভিজিট প্রথমবার ৩০০ টাকা এবং পরে আসলে ২০০ টাকা।
নগরীর আসকারাবাদ পার হয়ে ঈদগাঁও কাঁচা রাস্তার মোড়ে ১০ বছর ধরে দাঁতের ডাক্তারি করছেন সুজা ইসলাম। তিনিও হাইস্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। ঢাকায় এক ডেন্টাল কেয়ারে একসময় চা-পানি আনার কাজ করতেন। সেখানে থাকতে থাকতেই তার দাঁতের ডাক্তার হওয়া— জানান সুজা ইসলাম। ছোট্ট একটা ঘরে বসে রোগী দেখেন তিনি। রোগীদের দাঁত তোলা ও বাঁধাইয়ের কাজ করেন। পাশেই একটি মুদি দোকান। সেটি তার ছোট ছেলে রায়হানের।
মামার পর ভাগ্নেও এখন ‘ডাক্তার’
লালদিঘি পাড়ের সুমন ডেন্টাল ক্লিনিকের পাশেই প্রাইম ডেন্টাল ক্লিনিক। এখানে ৭ থেকে ৮ বছর ধরে রোগী দেখেন রমেন বড়ুয়া। তিনি টেকনিশিয়ান। আগে এখানে ‘চিকিৎসা’ দিতেন দিলীপ চৌধুরী। দিলীপ সম্পর্কে রমেনের মামা। মামার পর এখন উত্তরাধিকারসূত্রে ভাগ্নে অবতীর্ণ হয়েছেন ডাক্তারের ভূমিকায়। রমেন বড়ুয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। তবে রমেন দাবি করেছেন, দাঁত বাঁধাই, রুট ক্যানেল, স্কিলিং, ফিলিংসহ দাঁতের যাবতীয় চিকিৎসার কাজই তিনি জানেন। তবে প্রাইম ডেন্টাল ক্লিনিকে দাঁতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় কোনো যন্ত্রপাতিই দেখা যায়নি।
অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে ‘ডেন্টিস্ট’ দিলীপের আধঘন্টার অপেক্ষা
লালদিঘির এই একই মার্কেটে পাওয়া গেল দন্তচিকিৎসার আরও একটি দোকান— দন্তসেবা প্লাস ক্লিনিক। ঢাকা থেকে ডিপ্লোমা করেছেন দাবি করে এর মালিক দিলীপ বড়ুয়া জানান, এখানে বয়স্ক ব্যক্তিদের দাঁত তুলে দাত বাঁধানোর কাজ করা হয়। চিকিৎসা পদ্ধতি বলতে গিয়ে তিনি জানান, প্রথমে বৃদ্ধ রোগী আসলে তার রোগ সম্পর্কে জানেন। তারপর নিজেই অ্যানেসথেসিয়া (সার্জারির সময় অজ্ঞান করা) দিয়ে রোগীকে অজ্ঞান করেন। আধঘন্টা অপেক্ষা করার পর রোগীর শরীর অবশ হয়ে গেলে তিনি তখন বৃদ্ধ রোগীর দাঁত তুলে ফেলেন। তবে যেসব বয়স্ক ব্যক্তি মদ্যপান করেন, আনেসথেসিয়া দেওয়ার পরও তারা অজ্ঞান হন না বলে জানান ‘ডেন্টিস্ট’ দিলীপ। এমন রোগীদের তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তবে অন্য রোগীদের জ্ঞান ফেরে ঘন্টাখানেক পর— এমন তথ্য জানিয়ে দিলীপ জানান, রোগীর জ্ঞান ফেরার পর রোগীর হাতে প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন তিনি। ৭ থেকে ১০ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লিখে দেন প্রেসক্রিপশনে। দুই মাস পর আবার রোগীকে আসতে বলেন। পরে রোগী আসলে তারপর রোগীর দাঁত বানিয়ে লাগিয়ে দেন মাড়িতে। পুরো এই চিকিৎসা প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে রোগীর কাছ থেকে বড় একটা অংকের অর্থ নেন বলে জানান দিলীপ বড়ুয়া। সাধারণত ১৫ থেকে ১৭ হাজারের মধ্যে দাঁতের এই চিকিৎসা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
লালদিঘিতেই কেবল জনাত্রিশেক ‘দন্ত চিকিৎসক’
জানা গেছে, লালদিঘির পাড়ে ২৮ থেকে ৩০ জন টেকনিশিয়ান রয়েছেন যারা নিয়মিত দাঁতের রোগী দেখে থাকেন। তারা যে ছোট ঘরটাতে রোগী দেখেন তাকে ‘ক্লিনিক’ বলে চালালেও দাঁতের চিকিৎসায় যেসব যন্ত্রপাতি দরকার তার ন্যূনতম কিছুই নেই।
সরেজমিন ঘুরে এসব চেম্বারে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ টেকনিশিয়ান নিজেদের ‘ডেন্টিস্ট’ পরিচয় দিলেও কাজের কাজ তারা কিছুই বোঝেন না। রোগীকে রুট ক্যানেল না করিয়ে দাঁতের ক্যাপও লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ রোগীদের।
‘চীনা ডাক্তারের পুরাতন লোক’
লালদিঘির পশ্চিম পাড়ের স্মৃতি ডেন্টাল কেয়ারে রোগী দেখেন নুর হোসেন। তার ভিজিটিং কার্ডে লেখা তিনি সিভিল সার্জন কর্তৃক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কার্ডে আরও লেখা নূর হোসেন মো. মানিক ‘চীনা ডাক্তারের পুরাতন লোক’।
আমানত ডেন্টাল কেয়ারে রোগী দেখেন মো. ইমরান। তার নেমপ্লেটে লেখা আছে ‘চাইনিজ ডাক্তার টেকনিশিয়ান’। এর কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে ইমরান জানান, তার বাবা মোহাম্মদ ইউনুছ লালদিঘি মোড়ে চাইনিজ ডেন্টাল ক্লিনিকের টেকনিশিয়ান ছিলেন। তার বাবা মারা গেছেন ১০ থেকে ১২ বছর হবে। এসএসসিতে ফেল করার পর তিনি বাবার চেম্বারে বসতে শুরু করেন। দাঁত বাঁধাইয়ের কাজ করেন তিনি। যেসব রোগীর দাঁত পড়ে যায়, তাদেরকে তিনি ফলস (নকল) দাঁত লাগিয়ে দেন। প্রথমে দাঁতের আকৃতি নিয়ে ডাইস বানিয়ে রাসায়নিক পাউডার মিশিয়ে ফলস দাঁতগুলো গরম পানিতে সেদ্ধ করেন। এরপর দাঁত লাগিয়ে দেন রোগীকে।
‘এমবিভিডিএডিডি’ ডিগ্রি মানে ‘মেম্বার অব ভিলেজ ডক্টর’
লালদিঘির পশ্চিম পাড়ে নবগ্রহ বাড়ি মন্দিরের পাশে পূবালী ডেন্টাল ক্লিনিকে রোগী দেখেন জিকে বড়ুয়া। তার ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে ‘এমবিভিডিএডিডি’। জিকে বড়ুয়ার কাছ থেকে এর পূর্ণ রূপ হিসেবে জানা গেছে— ‘মেম্বার অব ভিলেজ ডক্টর’।
এই দোকানের ঠিক পাশেই পূরবী ডেন্টাল কেয়ারে রোগী দেখেন ডেন্টিস্ট প্রকৃত রঞ্জন বড়ুয়া। তিনি বলেন, এই চেম্বারটি আগে ছিল তার জেঠা বা বাবার বড় ভাইয়ের। জেঠার সহকারী হিসেবে তিনি কাজ করতে গিয়ে দাঁতের চিকিৎসা শিখে ফেলেছেন। তার ফি ৩০০ টাকা। তিনি দাঁত বাঁধাই, স্কেলিং ও ফিলিংয়ের কাজ করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা তার এসএসসি।
দূরত্ব ১০০ গজ, তবু নেই অ্যাকশন
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে লালদিঘির দূরত্ব প্রায় ১০০ গজ। তবু কেন কথিত ডেন্টিস্টদের বিরুদ্ধে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না— সে বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জানান, ‘এর আগে কথিত ডেন্টিষ্টদের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে অ্যাকশনে যাওয়া হয়েছিল। মোটা অংকের টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার সময়ে বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি নিয়ে কিছু করা হয়নি।’ তবে এদের বিরুদ্ধে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।
ট্রান্সমিশন ডিজিসের শিকার হচ্ছে অনেকেই
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ডা. সরওয়ার কামাল মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ডাক্তার বলে দাবি করলেও এসব কথিত দাঁতের ডাক্তার যথাযথ চিকিৎসা জানে না। যেমন একজন রোগীর দাঁতে রুট ক্যানেল করা যাবে না। কিন্তু তারা সেটাই করে। অনেক ক্ষেত্রে রুট ক্যানেল না করেও প্রাথমিক পর্যায়ে ফিলিং করে দিলে হয়। কিন্তু তারা রুট ক্যানেল করায় কিছুদিন পর রোগীর ক্ষত স্থানে ইনফেকশন তৈরি হয়। পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে রোগীর মাড়িকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
তিনি বলেন, ‘লালদিঘী, পতেঙ্গা, ইপিজেড, আগ্রাবাদ, চকবাজার, মুরাদপুরসহ নগরীর যেখানে-সেখানে গড়ে উঠা এসব কথিত দাঁতের ডাক্তারের চেম্বারে এমনকি স্টেরিলাইজেশন কিংবা অটোক্ল্যাপ মেশিনও নেই। ফলে রোগীরা দাঁতের চিকিৎসা করাতে এসে ট্রান্সমিশন ডিজিসের শিকার হয়ে হেপাটাইসিস বি ও সি-তে আক্রান্ত হন।’
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চট্টগ্রামের চিকিৎসক ডা. খোরশেদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা বিএমডিসি কর্তক নিবন্ধিত চিকিৎসক, তারাই ডেন্টিস্ট। অলিগলির এসব কথিত ডেন্টিস্টের কোনো লাইসেন্সও নেই। কথিত এই ডাক্তারদের কাছে গিয়ে রুট ক্যানেলের পর ইনফেকশন হয়, মাড়ি ফুলে যায়। অনেক সময় ক্ষত স্থান থেকে রোগীর দাঁতে ক্যান্সারেরও সৃষ্টি হয়।’
ডেন্টিস্ট্রি পড়ানো হয় শুধু ৩৫ টি ডেন্টাল কলেজ/মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটে
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় – ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর চিকিৎসা অনুষদে ডেন্টিস্ট্রি অধিভুক্ত আছে। যার অধীনে বাংলাদেশের ৯টি সরকারি ও ২৬টি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ/ মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটে ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারী (বিডিএস) পড়ানো হয়। বিডিএস ডিগ্রী অর্জনের পর প্র্যাকটিস করার জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে সনদ নিতে হয়। এর জন্য সফলভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করতে হয়।
চট্টগ্রাম প্রতিদিন থেকে পরিমার্জিত
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৩৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে ৩৯৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৭ জনে।
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। ফলে মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৩১ জনই রয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ল্যাবরেটরিতে ৬ হাজার ৯০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এদিকে, একদিনে করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ৯৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫ হাজার ৭১১ জন।
দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
ঢাকায় দন্তচিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. রিপন (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এই তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে ঝালকাঠি জেলার নলছিটিতে অভিযান চালিয়ে রিপনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ডিবি।
গত ২৭ মার্চ ভোরে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় ছিনতাইকারীদের হাতে সংঘটিত এই হত্যার ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ডিবির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, এই হত্যার ঘটনায় আগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জবানবন্দিতে রিপনের নাম আসে। এই তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বুলবুল হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন রিপন। তিনি ছিনতাইকারী দলটির নেতা।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, বুলবুলকে হত্যার পর রিপন নলছিটিতে পালিয়ে ছিলেন। তাঁর বাড়ি ওই এলাকায়।
মানস কুমার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রিপন জানিয়েছেন, বুলবুলের সঙ্গে থাকা টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিতে তাঁরা পাঁচজন মিলে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। বুলবুলের সঙ্গে ১২ হাজার টাকা ছিল।
বুলবুল হত্যায় আগে গ্রেপ্তার চারজন হলেন আরিয়ান ওরফে হাফিজুল ওরফে হৃদয় (৩৯), সোলায়মান (২৩), রায়হান ওরফে আপন ওরফে সোহেল (২৭) ও রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫)।
হৃদয় ও সোলায়মান ইতিমধ্যে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি অনুযায়ী, তাঁরা পাঁচজন গত ২৬ মার্চ দিবাগত রাত ২টা থেকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ঘোরাঘুরি করছিলেন। বুলবুল যখন রিকশায় করে পশ্চিম কাজীপাড়ার নাভানা ফার্নিচারের সামনে আসেন, তখন তাঁরা তাঁর গতিরোধ করেন। এ সময় দলনেতা রিপনসহ অন্যরা বুলবুলের কাছে যা আছে, তা দিয়ে দিতে বলেন। বুলবুল দিতে রাজি না হলে তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিলে বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন রিপন।
ডিবি পুলিশের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম অবস্থায় বুলবুল রাস্তায় পড়ে থাকেন। স্থানীয় লোকজনসহ বিহঙ্গ পরিবহনের বাসচালক আশিফ ও চালকের সহকারী সাগর মিলে বুলবুলকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
বুলবুল হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শাম্মী আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলায় গত ৩০ মার্চ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরদিন আদালত তাঁদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জাতীয়
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিচার শুরু
Published
2 months agoon
June 12, 2022অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ সহ রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হলো।
রোববার (১২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এ অভিযোগ গঠন করেন। হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক এই মামলা করে।
অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. দিদারুল ইসলাম।
এর আগে গত ৬ জুন এ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন আসামিপক্ষে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন করেন। অন্যদিকে দুদক অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ১২ জুন দিন ধার্য করেন।
২০২১ সাকের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন। এছাড়া মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ বদলির আদেশ দেন।
২০২০ সালের ২৩ বছরের সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী এই মামলাটি দায়ের করেন। হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই মামলা করা হয়। সেখানে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা হয়নি। তবে তদন্তে নাম আসায় অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করেন। এসময় দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়ন না করা রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক চুক্তি সম্পাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করেছেন। ওই হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার জন্য রোগী প্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্য কর্মকর্তাদের মাসিক খাবার খরচ হিসেবে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার চাহিদা তুলে ধরাসহ এর খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জাতীয়
ডেন্টাল ইউনিটের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট, সেবা ব্যাহত
Published
2 months agoon
June 12, 2022২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে জনবল–সংকট। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এতে দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাঁরা পাচ্ছেন না যথাযথ চিকিৎসাসেবা।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর ডেন্টাল সার্জন মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অটোক্লেভ মেশিনের জন্য আবেদন করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি অনেক দিন ধরে নষ্ট। এতে সাধারণ রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ অটোক্লেভ মেশিন দরকার। পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান গত ৬ জানুয়ারি ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের চিফ টেকনিক্যাল ম্যানেজার (উপসচিব) এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর চিঠি দেন।
ওই চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় থেকে ২ হাজার রোগী বহির্বিভাগে আসেন। এর মধ্যে ডেন্টাল বিভাগে প্রচুর রোগী আসেন। কিন্তু হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিমিউ অ্যান্ড টিসি বিভাগের সিনিয়র টেকনিশিয়ান (যান্ত্রিক) মো. হাফিজুর রহমান হাসপাতালে আসেন। তিনি ডেন্টাল ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ওই সময় তিনি দেখতে পান, ডেন্টাল কক্ষের এয়ার কমপ্রেসর পাওয়ার কাজ করে না, মোটরটি পুড়ে গেছে, প্রেসার কন্ট্রোল সুইচ ও পাওয়ার সার্কিট নষ্ট।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ডেন্টাল কক্ষে সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার ডেন্টাল চেয়ার, বাতি (লাইট) ও কমপ্রেসর অকেজো হয়ে গেছে। সেখানে পানির সংযোগও নেই। সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ডেন্টাল সার্জন মোছা. ফরিদা ইয়াছমিন ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. নাজিম উদ্দিন মিলে ৯৭ জন রোগী দেখেছেন। এর আগের দিন সোমবার তাঁরা দুজন মিলে ১২৫ জন রোগী দেখেছেন। তবে এখানে দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের জন্য এক্স-রে করার যন্ত্র নেই।
এদিকে হাসপাতালে ডেন্টাল সার্জনের পদ রয়েছে একটি। আর মেডিকেল টেকনোলজিস্টের দুটি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন একজন। ফলে এখানে প্রয়োজনীয় জনবলের সংকট আছে।
ডেন্টাল ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে আসা রোগীদের রুট ক্যানেল, দাঁত ফিলিং ও দাঁত তোলা হয়। সপ্তাহে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার শুধু শিশু ও বয়স্ক রোগীদের দাঁত তোলা হয়। রুট ক্যানেল ও দাঁতের ফিলিং করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে দাঁতের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতিসহ জনবল–সংকটে রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জেলা শহরের কাজীপাড়া এলাকার ফারুক মিয়া বলেন, ‘প্রচণ্ড দাঁতের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যাই। চিকিৎসক এক্স-রে করাতে বলেছেন। কিন্তু জেলার এত বড় হাসপাতালে দাঁতের এক্স-রে করার যন্ত্র নেই। এ ছাড়া ডেন্টাল ইউনিটের চেয়ার নষ্ট, বাতি কাজ করে না। নেই চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও। তাই বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়ে দাঁত ফেলেছি।’
ডেন্টাল সার্জন ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় ডেন্টাল ইউনিটটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। নেই তেমন জনবল। শুধু শিশু ও বয়স্কদের দাঁত তোলার পাশাপাশি অন্য রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকি। ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখেছি।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ডেন্টাল ইউনিটের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
খুলনার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খুলনায় ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য রূপসা সেতুর বাইপাস সড়ক ও লবণচরা থানার পাশে ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রথম পর্যায়ে কলেজে ১২০টি আসন এবং ৫০০ শয্যা করার প্রস্তাবনা দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সরেজমিনে দেখে নগরী সংলগ্ন লবণচরা থানার পাশে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ২০ একর জমি চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠায় খুলনা জেলা প্রশাসন। জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা।
পরবর্তীকালে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ‘খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ কার্যক্রম শুরু হয়। ২৯ নভেম্বর নিয়োগ করা হয় প্রকল্প পরিচালক। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম)’ পরিচালিত সমীক্ষা কার্যক্রম বা ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সম্পন্ন হয়েছে ডিজিটাল সার্ভের কাজও।
খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক ডা. মোশাররফ হোসেন খন্দকার জানান, সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে একনেকে। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর ঠিকাদার নিযুক্ত করা হলে তারা অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করবে। অবকাঠামো নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এই কলেজ হাসপাতালটি বিশ্ব মানের একটি প্রতিষ্ঠান হবে বলেও জানাচ্ছেন তিনি।
প্রকল্প পরিচালক জানান, কলেজে মোট ১২০টি আসন এবং হাসপাতালে ৫০০ শয্যা চালু করার জন্য তারা প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন। একাডেমিক ভবনে মোট ২৮টি বিভাগ থাকবে। প্রশাসনিক ভবন হবে আট তলা। প্র্যাকটিক্যাল কক্ষ, বিভিন্ন ধরনের ল্যাব, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক বিভাগ ও ৪০০ আসনের একটি লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে। থাকবে অডিটোরিয়াম, লেকচার গ্যালারি, শ্রেণিকক্ষ, টিউটোরিয়াল কক্ষ, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৃথক কমন রুম, ক্যাফেটেরিয়া প্রভৃতি। কলেজে মর্গ ও মরচুয়ারি এবং ডিএনএ টেস্টের আধুনিক ল্যাব থাকবে। এর পাশাপাশি অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হোস্টেলসুপার ও হাসপাতাল পরিচালকের আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
তিনি জানান, হাসপাতালে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ, আউটটোর, ফার্মেসি প্রভৃতি থাকবে। নির্মাণ করা হবে হাসপাতাল ভবন, প্রশাসনিক ভবন। বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুকুর, মাঠ ও জিমনেসিয়াম তৈরি করা হবে।
সোমবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে ‘খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা’ শীর্ষক প্রকল্পের মতামত জরিপ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতামত জরিপ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান।
সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার। বক্তৃতা করেন খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দ্বীন উল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, খুলনা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অসিম কুমার সাহা, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহীদুজ্জামান বাবলু, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা প্রমুখ।
সভায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, বিআইএম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় যাতে দ্রুত কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যায়, সেজন্য গুরুত্বারোপ করা হয়। সভায় জানানো হয়, প্রস্তাবিত ডেন্টাল কলেজের জায়গার পাশেই শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক জানান, দ্রুত জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করবে।
ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতবিনিময়
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের তথ্য কেন এনআইডিতে নয়, হাইকোর্টের রুল
বিএফডিএস’র আয়োজনে ডেন্টিস্টদের পদ্মা সেতু ভ্রমণ
রংপুর মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল ইউনিটের দশ বছর পূর্তি উদযাপিত
ঢামেকে “ওয়েগেনারস গ্রানুলোমেটোসিস” বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
বিএফডিএস কতৃক ইন্টার্ণ চিকিৎসকের নিয়ে কার্যকর আয়োজন
৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
ডেন্টাল রেকর্ডের মাধ্যমে নিখোঁজ ব্রিটিশ সাংবাদিক শনাক্ত
ঢাকায় ২৯ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি
৪৩৩ জনের করোনা শনাক্ত, হার ৬.২৭ শতাংশ
৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন
দন্তচিকিৎসক বুলবুল হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিচার শুরু
ডেন্টাল ইউনিটের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট, সেবা ব্যাহত
আন্দোলনের তৃতীয় দিনে সলিমুল্লাহ মেডিকেলের ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থীরা
পঞ্চম শ্রেণি পাশ না করেই তিনি অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট!
খুলনা ডেন্টাল কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ কতটুকু এগিয়েছে?
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেন্টাল ইউনিটে চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন
দেশে অসংক্রামক রোগে ৬৭ শতাংশ মানুষের মৃত্যু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিডিএস ৩য় ফেজ এর শিক্ষার্থীদের জন্যে পেরিওডন্টোলজী এন্ড ওরাল প্যাথলজীর বই এর মোড়ক উন্মোচন
সম-সাময়িক
-
জাতীয়2 months ago
মাটিরাঙ্গায় ২ ডেন্টাল ক্লিনিক সিলগালা ; দেড় লাখ টাকা জরিমানা
-
সংগঠন2 months ago
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে স্পেশাল হেলথ কেয়ার ফাউন্ডেশন
-
জাতীয়2 months ago
খাগড়াছড়িতে ২ ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড
-
জাতীয়2 months ago
মির্জাপুরে ৩ টি ডেন্টাল চেম্বার সহ ১১ প্রতিষ্ঠান সিলগালা