এবার একুশে পদক পাচ্ছেন ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ও চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ কাজী কামরুজ্জামান । সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিতে এবার একুশে পদক পাচেছন তিনি।
বৃহস্পতিবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (অনুষ্ঠান) অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শিল্পকলা, সাংবাদিকতা, সাহিত্য, শিক্ষা, অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য একুশে পদক দেওয়া হয়ে থাকে।
এতে বলা হয়, ‘সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিককে ২০২১ সালের একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সাধারণ মানুষের আয়-সীমার মধ্যে একটি টেকসই, নিরাপদ এবং সংহত চিকিৎসা সেবা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্ট ৩ দশকের বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
হাসপাতালে সাধারণ চিকিৎসা প্রদান ছাড়াও চিকিৎসা শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচীর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ট্রাস্ট ইতিমধ্যে একটি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিট, নার্সিং কলেজ এবং প্যারামেডিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার অঙ্গীকার থেকে গ্রামের গরীব জনগণের জন্য চালু করেছে গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচী, বিভিন্ন শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য শিল্প স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচী এবং দরিদ্র শিশু-কিশোরদের জন্য স্কুল স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচী ।
স্কুল স্বাস্থ্য কর্মসূচী সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দরিদ্র ও শ্রমজীবী শিশু কিশোরদের জন্য সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত বিদ্যালয়সমূহে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম যা ২ দশকেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত আছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের “যখন তখন শিক্ষা” নামে পরিচালিত ৬ টি স্কুল, মহিলা সমিতি পরিচালিত শিশুদের স্কুল, সুলতান-ছফা পাঠশালা, ইউসুফ স্কুল, শিশু স্বর্গ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে এই সেবাটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।
এছাড়া, পিতৃমাতৃহীন বা পিতৃহীন এতিম শিশুদের ভরণপোষণ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং উপযুক্ত মর্যাদায় সমাজে পুনর্বাসনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে সরকারি শিশু পরিবার পরিচালনা করছে। দৃষ্টি , শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী দরিদ্র শিশু-কিশোরদের জন্য পরিচালনা করছে আবাসিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সমূহ ।
গত ডিসেম্বর’২০ মাস থেকে সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ঢাকা শহরের অনাথ, উদ্বাস্তু ও প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরদের ৭টি স্কুল ডিসিএইচ ট্রাস্টের স্কুল স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচীর সাথে যুক্ত হয়েছে। স্কুল গুলো হলো সরকারী শিশু পরিবার (বালক), সরকারী শিশু পরিবার (বালিকা), ছোট মনি নিবাস, দিবাকালীন শিশু যতকেন্দ্র, সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম, সরকারী বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও সরকারী আশ্রয় কেন্দ্র।
করোনার জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরূপ এ বছর একুশে পদক পাচ্ছেন অণুজীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গবেষণা ক্যাটাগরিতে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (অনুষ্ঠান) অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক চলতি বছর (২০২১) একুশে পদক পাচ্ছেন।
ড. সমীর কুমার সাহা ১৯৫৫ সালে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা চন্দ্রকান্ত সাহা ও মা দুলালী প্রভা সাহা। চন্দ্রকান্ত সাহা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। পেশাগত কারণে চন্দ্রকান্ত সাহাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকতে হতো। সেই সুবাদে ড. সমীর কুমার সাহার শৈশব ও স্কুলজীবন কেটেছে রাজশাহীতে। রাজশাহীর চারঘাট থানার আড়ানী গ্রামের মনমোহিনী হাইস্কুলে স্কুলজীবন করেন। চৌমুহনীর মদনমোহন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর চন্দ্রকান্ত সাহা সপরিবারে চাঁদপুর চলে আসেন। সেখানে জেলার সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন সমীর কুমার সাহা। কলেজে পড়াকালীন সময়ে তিনি রামকৃষ্ণ আশ্রমে থাকতেন।
১৯৭৫ সালে এইচএসসি শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৮৩ সালে উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতক করার পর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
এরপর তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজিতে যোগ দেন। ১৯৮৯ সালে ভারতের বানারসে ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স থেকে মেডিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে আবার ঢাকা শিশু হাসপাতালে ফিরে আসেন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালে ফিরে আসার পর এখানে সীমিত পরিসরে গবেষণার জন্য দল গঠন করেন তিনি। সেই সময় শিশুরা ডায়রিয়ার থেকে বেশি মারা যেতো নিউমোনিয়া, টাইফয়েড ও মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে। তখন তিনি নিউমোনিয়ার নির্দিষ্ট দুটি জীবাণু নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। একই সঙ্গে টাঙ্গাইলে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতাল, রাজধানীর মিরপুরের শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতাল, চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতাল এবং সিলেটের বালুচরের গবেষণাগার থেকেও তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
তাঁর গবেষণার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সরকার শিশু মৃত্যু হার কমানোর জন্যে বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে ভ্যাকসিন ‘হিব পেন্টাভ্যালেন্ট’ ও ‘নিউমোকক্কাস’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শিশু মৃত্যুহার কমানোর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭ সালে তিনি ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে প্রথম এশীয় হিসেবে জে. ফিনলে পুরস্কার অর্জন করেন ডা. সমীর। একই সঙ্গে অণুজীববিজ্ঞানীদের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজির পক্ষ থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার পান। যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডার বাইরে এই পুরস্কার আগে দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০১৯’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন দন্ত চিকিৎসক ডাঃ উর্বি ইসলাম। সোমবার রাতে রাজধানীর আইসিসিবি’তে এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতায় প্রায় আট হাজার নারী এই প্রতিযোগিতার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে থেকে ৫০০ প্রতিযোগীকে বাছাই করে, প্রাথমিক অডিশনের মধ্য দিয়ে প্রায় ২০০ প্রতিযোগী টিকে ছিল। কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে ১০০ জনকে নিয়ে শুরু হয় মূল আয়োজন। সেরা এগারো প্রতিযোগী নিয়ে হয় চূড়ান্ত পর্ব। চ্যাম্পিয়ন হওয়া উর্বি ইসলাম ডিসেম্বরের শেষের দিকে চায়না’তে অনুষ্ঠিত মিসেস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজের ১৮তম ব্যাচের সাবেক এ শিক্ষার্থী বাংলাদেশ টেলিভিশনে ইংরেজী সংবাদ পাঠক এবং উপস্থাপিকা হিসবে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করছেন।
‘বায়োজিন কসমেসিউটিক্যালস মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ-২০১৯’ শিরোনামের এ প্রতিযোগিতার আয়োজক অপূর্ব আব্দুল লতিফ বলেন, ‘বাংলাদেশে মেধাবী ও বিবাহিত নারীদের নিয়ে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু হয়নি। সেই তাগিদেই এমন একটা আয়োজন করা। নারী শক্তি ও নারী জাগরণকে একধাপ এগিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই এ আয়োজন।’
এই প্রতিযোগিতায় শুরু থেকে অডিশন, গ্রুমিং এবং মোটিভেশনাল সেশনে বিচারক হিসেবে ছিলেন, অভিনেতা ও পরিচালক শহীদুল আলম সাচ্চু, আবদুন নুর তুষার, আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মোস্তফা, গ্রুমিং ইন্সট্রাক্টর কৃষান ভূইয়া, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও মডেল জাহারা মিতু, উপস্থাপিকা ইসরাত পায়েল, মডেল অভিনেতা অন্তু করিম, ফারহানা আফরিন ঐশী প্রমুখ।