অনেকের মনেই এই প্রশ্ন জাগে দাঁত তো শরীরেরই একটি অংশ – তবে কেন এটি সাধারণ এমবিবিএস এর অংশ নয়? কেন ডেন্ট্রিস্ট্রি/বিডিএস একটি আলাদা ডিগ্রি? কোন ডিগ্রির গুরুত্ব কেমন – কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ – শুধু দাঁতের পেছনে এতগুলো টাকা খরচ করবো? – এসব প্রশ্ন-তর্ক-বাকবিতণ্ডা যাই বলি না কেন, তা আজকের নতুন নয়।
প্রথমে আসি দুই ডিগ্রির ভিন্নতার জায়গাগুলো নিয়েঃ একজন চিকিৎসক সাধারণভাবে পুরো শরীরেরই তত্ত্বাবধায়ন করেন। কিন্তু যদি শরীরের বিশেষ কোন অঙ্গের কোন বিশেষ অসুখ হয় এবং এজন্য আলাদা অভিজ্ঞতার দরকার হয়, তখন তিনি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক এর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। যেমনঃ চোখের সমস্যায় চক্ষু বিশেষজ্ঞ, একি ভাবে মা ও প্রসুতি রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি।
তেমনই দাঁতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হলেন ডেন্টিস্ট/দন্ত বিশেষজ্ঞ/সবচেয়ে বহুল প্রচলিত শব্দে বললে দাঁতের ডাক্তার!একজন দাঁতের ডাক্তার যেমন আপনার চোখের সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন না, তেমনি চোখের ডাক্তারও পারবেন না আপনার দাঁতের চিকিৎসা দিতে!
আমাদের পুরো মানবশরীরকে একটি যন্ত্রের সাথে তুলনা করা যায়।যন্ত্রের কোন একটি অংশের সমস্যা যেমন পুরো যন্ত্রের কার্যকালাপে বাঁধা দেয়, একই ভাবে মানুষের শরীরের সব অঙ্গপ্রতঙ্গই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।সে হিসেবে মানবদেহ হলো দুনিয়ার সবচেয়ে জটিল যন্ত্র! তাই দুর্ভাগ্যবশত একজন মানুষের এক মানবজীবনে এই জটিল যন্ত্রের প্রতিটি অঙ্গে-প্রতঙ্গের সব ঘুরপ্যাঁচ নিয়ে পড়াশোনা করা সম্ভব হয় না।একথা সহজেই বোধগম্য, কারণ শুধুমাত্র যে কোন এক অংশ নিয়ে পড়াশুনা করেই ডাক্তার সমাজ বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ছাত্রজীবন কাটান! আর পুরো মানবদেহের সবকিছুর বিশেষজ্ঞ হতে হলে তাকে ডাক্তারি ছেড়ে হয়ত সারাজীবন ধরে কলেজের গন্ডিতেই থাকতে হবে!!এই মুশকিলে আহসান হলোঃ প্রতি বিষয়ের আলাদা বিশেষজ্ঞ আর নিজের বিষয়ের বাইরে সমস্যায় দায়িত্ব হস্তান্তর করা সে বিষয়ের বিশেষজ্ঞের কাছে! ডেন্টিস্ট্রির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে দাঁত ও মুখের নানান সমস্যা। এর বাইরেও সৌন্দর্যবোধ ডেন্ট্রিস্টির একটা বড় অংশ জুড়ে আছে। বেশির ভাগ সময় মানুষ ডাক্তারের কাছে যায় যখন তারা অসুস্থ কিংবা রোগাক্রান্ত হয়।আর ডেন্টিস্ট্রিতে মানুষ দাঁতের ব্যাথা, মুখের রোগ ছাড়াও আসেন সৌন্দর্যববর্ধনের জন্য, একটি জন্মগত ত্রুটিহীন সুন্দর চেহারা কিংবা সুস্থ, সুন্দর হাসির জন্য!
পড়াশুনার ক্ষেত্রে বেসিক সাব্জেক্টগুলো একই!অতিরিক্ত বলতে ডেন্টিস্ট্রিতে প্রথম বর্ষ থেকেই দাঁত ও মুখের চিকিৎসা সংক্রান্ত আলাদা বিষয় থাকে, যা এমবিবিএস ডিগ্রিধারীদের জন্য পাঠ্য নয়! আবার এমবিবিএস ডিগ্রিতেও কয়েকটি নিজস্ব সাব্জেক্ট আছে যা ভবিষ্যৎ ডেন্টাল সার্জেনদের জন্য পাঠ্য নয়।এমবিবিএস এর ক্ষেত্রে, এইচএসসি পাস করার পর কোন একটা মেডিকেল কলেজে পড়াশুনে করে পাস করে ইন্টার্ন সম্পূর্ণ হলে তিনি প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করতে পারেন। এরপর (যদি তারা চান) যে কোন একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন।বিডিএস এর ক্ষেত্রে, এইচএসসি পাসের পর মেডিকেল কলেজ ইউনিট/ডেন্টাল কলেজে পড়াশুনা করেন। তাঁরা পাসই করেন একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে এবং একইসাথে তখন থেকেই তারা প্র্যাক্টিস করতে পারেন।পরবর্তীতে তারা চাইলে ডেন্টিস্ট্রির যে কোনো একটি নির্দিষ্ট শাখায় যেতে পারেন যেমনঃ Periodontics, Prosthodontics, Oral & Maxillofacial Surgery, Orthodontics, Endodontics, Pedodontics etc. প্রতিটা শাখা একদমই স্বতন্ত্র এবং চ্যালেঞ্জিং!
মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুখের রোগে আক্রান্ত হবার আগ পর্যন্ত মুখের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে না (মুর্খ, অশিক্ষিত লোকদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গ থেকে এমন আচরণ আসলেও হজম করতে কষ্ট হয়!)এর ফলশ্রুতিতে অনেক মানুষই দাঁতের ব্যথায় অস্থির হবার আগে ডেন্টিস্টের মুখদর্শনও করেন না! ফলে অনেক সময়ই মুখের জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়!( এর একটা মুখ্য কারণ অবশ্য কোনভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাবে না যে, ডেন্টাল চিকিৎসা একটু ব্যয়বহুল যা অনেকের পক্ষেই বহন করা সম্ভব হয়ে উঠে না! এবং এক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স কম্পানিগুলোরও সহয়তা পাওয়া না। যেহেতু মুখের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ শরীর সম্পর্কযুক্ত, ডেন্টাল চিকিৎসাকেও মেডিকেল ইন্সুরেন্সের আওতাভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। )
সম্প্রতি গবেষকরা দাঁতের রোগের সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। এমন আরো অনেক সংযোগ খুঁজে পাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা!তাই একথা নির্দিধায় বলা যায়, যখন আপনি দাঁত কিংবা মুখের যত্ন নিচ্ছেন, পরোক্ষভাবে আপনি আপনার পুরো স্বাস্থ্যরই খেয়াল রাচ্ছেন! আর সাথে বোনাস হিসেবে তো একটি সুস্থ-সুন্দর হাসি থাকছেই, যা আপনার আত্মবিকাশকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ!সবশেষে আপনার প্রশ্নটা যদি হয় ‘বিডিএস আর এমবিবিএস কোনটি গুরুত্বপূর্ণ!!’আমি আপনাকে পাল্টা প্রশ্ন করব আপনার জন্য কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? ডান হাত না কি বাম হাত?
ডান হাত আর বাম হাতের মধ্যে যেমন তুলনা চলে না, দুইয়ে মিলে সহযোগীতার সম্পর্ক হয়, একসাথে কাজ করে যায়! ঠিক তেমনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রি হলো এমবিবিএস এবং বিডিএস, এদের মধ্যেও আর যাই হোক, তুলনা চলে না!’
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীতে দেশে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন আসতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আজই হয়তো এর ডিক্লিয়ারেশন আসতে পারে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিভিন্ন টাইপের লকডাউন আসবে।’
সেটা কেমন হবে জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দারবানে যাওয়া আসা বন্ধ হবে। বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিক, ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশনা আসতে পারে। যেখানে জনসমাগম হয় সেসব জায়গায় রেস্ট্রিকশন আসতে পারে-এভাবেই বিভিন্ন ধরনের রেস্ট্রিকশন আসবে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ের প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ২২ দফার যে প্রোপোজাল গেছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেখে যেটা ভালো মনে করবেন সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকবে।’
প্রস্তাবানার মধ্যে আছে:
১. সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কমিউনিটি সেন্টার/কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে/জন্মদিন/সভা/সেমিনার ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।
২. বাড়িতে বিয়ে/জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা (ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫-এর অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০-এর অধিক নয়)।
৪. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার ও সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘বিটকরোনা’ নামের করোনা শনাক্তকারী কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা টুল তৈরি করেছে দেশি সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইজেনারেশন । তাদের দাবি, করোনাবট এবং এক্স-রে ইমেজ অ্যানালাইসিস টুল উন্নত উপায়ে ও দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না, তা নিজে থেকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
ইজেনারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবহারকারী নিজেই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাতে নিতে পারেন, এ জন্য ইজেনারেশন করোনাবটকে সেলফ-টেস্টিং টুলস হিসেবে তৈরি করেছে। এটি ব্যবহারকারীকে নিজে থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে আইসোলেশনে থাকতে উৎসাহ দেয়।
এটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময় বাঁচাতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন বুঝতে পারা এবং সেটির যথাযথ উত্তর দেয়ার জন্য করোনাবটটিতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়েছে। বটটি ইংরেজি, বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে ইংরেজি অক্ষরে লেখা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
এর পাশাপাশি ইজেনারেশন মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রে ছবি বিশ্লেষণী টুল তৈরি করেছে যা বুকের এক্স-রে ছবি দেখে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে কার্যকর হতে পারে। এই টুল ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সুস্থ আছেন কিনা, মৃদু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা অথবা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটি জানা যাবে। ইজেনারেশন বিটকরোনা (http://beatcorona.egeneration.co/) ওয়েবসাইটে গিয়ে এক্স-রে ছবি আপলোড করলে টুলটি ফলাফল দেখাবে
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘ইজেনারেশন বিগত দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার ও অ্যানালিটিক্স নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির যে সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই সল্যুশনগুলি আমরা স্বল্প সময়ে তৈরি করতে পেরেছি।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নারীসহ আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামাড়পাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের এক নারী ও জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা গ্রামের ৩০ বছরের এক যুবক।
আক্রান্ত ওই নারী ঢাকায় বোনের বাসায় এবং যুবক ঢাকায় জুয়েলারি দোকানে থাকতেন। ২৬ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান। এরমধ্যে তাদের ওই দুইজনের করোনা পজিটিভ ও চারজনের নেগেটিভ আসে বলে স্বাস্থ্যকর্মী এজাজুল হক হাসান রাত সাড়ে এগারোটায় জানিয়েছেন।
এর আগে ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের পলি ক্লিনিকের সিনিয়র ওটি বয় অখিল চন্দ্র সরকারের করোনা পজিটিভ হলে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে ২৪ এপ্রিল বাড়ি আসেন।
এ পর্যন্ত মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে ১৪৯ জনের করোনা নেগেটিভ ও ৩ জনের পজিটিভ আসে।
উপজেলা প্রশাসন রাতেই তাদের ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো এবং আশপাশের অর্ধশত বাড়ি লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
চিকিৎসক-নার্সসহ ৬৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী মরণব্যাধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সংগঠনটির মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে বাংলাদেশও গভীর সংকটের সম্মুখীন। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫২ জন।
এতে আরও বলা হয়েছে, করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সেবাদানকারীগণ আশঙ্কাজনকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২৯৫ জন চিকিৎসক, ১১৬ জন নার্স ও ২৪৯ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬০, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবাদানকারী ব্যক্তিগণ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামীতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত প্রস্তাবনাসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় বিএমএ। এগুলো হলো:
১. দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সঠিক মানের পিপিই, এন-৯৫ বা এর সমমানের মাস্ক প্রদান করা জরুরি। ২. নন-কোভিড হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে ট্রায়াজ সিস্টেম চালু করে সেখানে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত পিপিই, এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক প্রদান নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। ৩. সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশে মহামাহারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৫২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯৭ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫২ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩১ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ সাত হাজার। তবে পৌনে নয় লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।