ডাঃ মো. আসাফুজ্জোহা রাজ: সময়ের প্রয়োজনেই আমাদের দেশে ডেন্টাল চিকিৎসার মান এখন অনেক আধুনিক। ২০০০ সালের প্রথমদিকেও দেশে অনুমোদিত ডেন্টাল সার্জনের সংখ্যা ছিল মাত্র এক হাজারের মতো। তখন জনগোষ্ঠীর বড় একটা অংশ অনেকটা নিরুপায় হয়ে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতো।
আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা কম ছিল বলে তখন স্বল্প খরচে দাঁতের সমস্যায় দাঁত তুলে ফেলতে বেশি আগ্রহী ছিল। প্রত্যেকটা দাঁতের নির্দিষ্ট কাজ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণাও ছিল না।
দাঁতের চিকিৎসায় খরচ করতেও ছিল অযৌক্তিক অনীহা। অল্প সময়ের মধ্যে সেই দুরবস্থা কাটিয়ে তুলেছেন বর্তমানের প্রায় দশ হাজার অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসক। প্রত্যেকটি রোগীকে স্পষ্টভাবে মনে রাখতে হবে, মুখের মধ্যকার যে কোনো রোগের চিকিৎসা দেয়ার বৈধ ক্ষমতা রাখেন কেবল বিডিএস (ব্যাচেল্র অফ ডেন্টাল সার্জারি) ডিগ্রিধারী চিকিৎসক। পরবর্তী সময়ে রোগের ধরন ও গভীরতা বিবেচনায় ডেন্টাল চিকিৎসকগণের মধ্যেও বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।
কিছুদিন আগেও সংখ্যায় অতি সামান্য হওয়াতে একজন ডেন্টাল চিকিৎসককে মুখের মধ্যকার সব রোগের চিকিৎসা দিতে হতো। বর্তমানে উন্নত বিশ্ব সমমানের চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের চিকিৎসকগণ নির্দিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, যেমন এন্ডোডেন্টিস্টরা আক্রান্ত দাঁতকে সংরক্ষণের জন্য স্বাস্থ্যবান্ধব কম্পোজিট ফিলিং, উন্নত ঘূর্ণয়মান যন্ত্রের সাহায্যে রুটক্যানেল চিকিৎসা দিচ্ছেন।
ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনরা জটিল দাঁত তোলার পাশাপাশি চোয়ালের হাড় ভাঙ্গা, মুখের অভ্যন্তরীণ টিউমার, সিষ্ট এমনকি ক্যান্সারের চিকিৎসা দিচ্ছেন, পাশাপাশি মুখের অস্বাভাবিকতা, ঠোঁট বা তালু কাটার চিকিৎসাও দিচ্ছেন।
অর্থডেন্টিস্টরা যে কোনো বয়সেই এলোমেলো উচুঁ-নিচু দাঁতকে সুন্দর সুসজ্জিত করছেন। প্রস্থোডন্টিস্টরা কৃত্রিম দাঁত সংযোজনে বিশ্বসেরা ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
কসমেটিক ডেন্টাল চিকিৎসা ও শিশুদের ডেন্টাল চিকিৎসাও আমাদের দেশ গর্ব করার মতো অবস্থানে আছে। দেশের ডেন্টাল সার্জনরা যখন নিরলস পরিশ্রম করে নিজ উদ্যোগে উন্নত বিশ্বে উদ্ভাবিত ও ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রের সঙ্গে নিজেদের পরিচিত করে দেশের সাধারণ জনগণের ডেন্টাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন তখন স্বচ্ছ জ্ঞানের অভাবে অনেক রোগী ডেন্টাল চিকিৎসায় আস্থাহীনতায় ভুগছেন। প্রধান কারণ হিসেবে বলা যায়, পর্যাপ্ত প্রচারের অভাব আর সাধারণ মানুষের ডেন্টাল চিকিৎসায় উদাসীনতা।
শরীরের অনান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন চোখ, হার্ট, কিডনি, লিভার ইত্যাদির অসুখে যেমন সাধারণ মানুষ যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে সাধ্যমতো খোঁজ-খবর নিয়ে চিকিৎসা নেয়, ডেন্টালের বিষয়টিতে ততটা সতকর্তা দেখা যায় না, অপেক্ষাকৃত কম চিকিৎসা খরচের জন্য অনুমোদনহীন ভুয়া চিকিৎসকের সরণাপন্ন হয়ে শুধু প্রতারিত হওয়ার আশংকাই নয়, উপরন্তু চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয় বহুল করে তোলে। সেখান থেকে চিকিৎসার প্রতি আস্থাও কমে যায়।
আমাদের দেশের চিকিৎসার মান ও তার খরচ এখন এতটাই জনপ্রিয় যে প্রবাসীরা দেশে এসে ডেন্টাল চিকিৎসা নিচ্ছেন, শুধু তাই নয়, ভিনদেশী রোগীরাও ডেন্টাল চিকিৎসায় বাংলাদেশকে বেছে নিতে শুরু করেছেন।
মুখের অভ্যন্তরে দাঁত বা মাড়ি রোগ কোনো অবস্থাতেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। চিকিৎসা গবেষকগণ স্পষ্ট প্রমাণ করেছেন দাঁত ও মাড়ির রোগের সঙ্গে শরীরের যে কোনো অঙ্গের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। সময় এসেছে এখন দাঁত থাকতেই দাঁতের মর্যাদা বোঝার, প্রতিটি মানুষেরই সচেতন হতে হবে ছয় মাস অন্তর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের মাধ্যমে মুখের অভ্যন্তর পরীক্ষা করিয়ে নেয়া।
সমগ্র বিশ্ব এ বিষয়ে জোরালো দাগিদ দিচ্ছে যাতে করে ডেন্টালের বড় ধরনের কোনো রোগ বা সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়। নিয়মিত নিয়ম অনুযায়ী মুখ পরিষ্কারে কোনো বিকল্প নেই, পাশাপাশি মিষ্টি আঁঠালো খাদ্যের প্রতি দুর্বলতা কমানোটা জরুরি। সচেতন ও পর্যাপ্ত জ্ঞান আমাদের মুখ তথা সমগ্র শরীরকে সুস্থ রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখে।
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীতে দেশে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন আসতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আজই হয়তো এর ডিক্লিয়ারেশন আসতে পারে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিভিন্ন টাইপের লকডাউন আসবে।’
সেটা কেমন হবে জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দারবানে যাওয়া আসা বন্ধ হবে। বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিক, ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশনা আসতে পারে। যেখানে জনসমাগম হয় সেসব জায়গায় রেস্ট্রিকশন আসতে পারে-এভাবেই বিভিন্ন ধরনের রেস্ট্রিকশন আসবে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ের প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ২২ দফার যে প্রোপোজাল গেছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেখে যেটা ভালো মনে করবেন সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকবে।’
প্রস্তাবানার মধ্যে আছে:
১. সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কমিউনিটি সেন্টার/কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে/জন্মদিন/সভা/সেমিনার ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।
২. বাড়িতে বিয়ে/জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা (ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫-এর অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০-এর অধিক নয়)।
৪. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার ও সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘বিটকরোনা’ নামের করোনা শনাক্তকারী কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা টুল তৈরি করেছে দেশি সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইজেনারেশন । তাদের দাবি, করোনাবট এবং এক্স-রে ইমেজ অ্যানালাইসিস টুল উন্নত উপায়ে ও দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না, তা নিজে থেকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
ইজেনারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবহারকারী নিজেই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাতে নিতে পারেন, এ জন্য ইজেনারেশন করোনাবটকে সেলফ-টেস্টিং টুলস হিসেবে তৈরি করেছে। এটি ব্যবহারকারীকে নিজে থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে আইসোলেশনে থাকতে উৎসাহ দেয়।
এটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময় বাঁচাতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন বুঝতে পারা এবং সেটির যথাযথ উত্তর দেয়ার জন্য করোনাবটটিতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়েছে। বটটি ইংরেজি, বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে ইংরেজি অক্ষরে লেখা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
এর পাশাপাশি ইজেনারেশন মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রে ছবি বিশ্লেষণী টুল তৈরি করেছে যা বুকের এক্স-রে ছবি দেখে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে কার্যকর হতে পারে। এই টুল ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সুস্থ আছেন কিনা, মৃদু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা অথবা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটি জানা যাবে। ইজেনারেশন বিটকরোনা (http://beatcorona.egeneration.co/) ওয়েবসাইটে গিয়ে এক্স-রে ছবি আপলোড করলে টুলটি ফলাফল দেখাবে
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘ইজেনারেশন বিগত দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার ও অ্যানালিটিক্স নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির যে সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই সল্যুশনগুলি আমরা স্বল্প সময়ে তৈরি করতে পেরেছি।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নারীসহ আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামাড়পাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের এক নারী ও জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা গ্রামের ৩০ বছরের এক যুবক।
আক্রান্ত ওই নারী ঢাকায় বোনের বাসায় এবং যুবক ঢাকায় জুয়েলারি দোকানে থাকতেন। ২৬ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান। এরমধ্যে তাদের ওই দুইজনের করোনা পজিটিভ ও চারজনের নেগেটিভ আসে বলে স্বাস্থ্যকর্মী এজাজুল হক হাসান রাত সাড়ে এগারোটায় জানিয়েছেন।
এর আগে ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের পলি ক্লিনিকের সিনিয়র ওটি বয় অখিল চন্দ্র সরকারের করোনা পজিটিভ হলে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে ২৪ এপ্রিল বাড়ি আসেন।
এ পর্যন্ত মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে ১৪৯ জনের করোনা নেগেটিভ ও ৩ জনের পজিটিভ আসে।
উপজেলা প্রশাসন রাতেই তাদের ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো এবং আশপাশের অর্ধশত বাড়ি লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
চিকিৎসক-নার্সসহ ৬৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী মরণব্যাধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সংগঠনটির মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে বাংলাদেশও গভীর সংকটের সম্মুখীন। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫২ জন।
এতে আরও বলা হয়েছে, করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সেবাদানকারীগণ আশঙ্কাজনকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২৯৫ জন চিকিৎসক, ১১৬ জন নার্স ও ২৪৯ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬০, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবাদানকারী ব্যক্তিগণ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামীতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত প্রস্তাবনাসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় বিএমএ। এগুলো হলো:
১. দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সঠিক মানের পিপিই, এন-৯৫ বা এর সমমানের মাস্ক প্রদান করা জরুরি। ২. নন-কোভিড হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে ট্রায়াজ সিস্টেম চালু করে সেখানে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত পিপিই, এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক প্রদান নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। ৩. সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশে মহামাহারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৫২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯৭ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫২ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩১ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ সাত হাজার। তবে পৌনে নয় লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।