জীবন ও কর্ম
ডেন্টাল কমিউনিটির লিজেন্ডদের গল্প নিয়ে আসছে Dentalegend’s Tale
গুণীজন
গুগল ডুডলে স্মরণ প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী চিকিৎসককে
জীবন ও কর্ম
Dentalegends Tale এর দ্বিতীয় পর্বে থাকছেন অধ্যাপক ডাঃ মতিউর মোল্লা
সাক্ষাৎকার
ফ্রান্সে ডেন্টিস্ট্রির উচ্চশিক্ষা: যেসব তথ্য জেনে নেয়া প্রয়োজন
জীবন ও কর্ম
ভেবেছিলাম বড় হয়ে চিত্রকর হবো কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে ছিলো অন্য
বিখ্যাত চিত্রকর Paul Gauguin বলেছেন “Color! What a deep & mysterious language, the language of dreams ” সত্যিই তাই। সেই আদিমকাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষের মনের খোরাক এমন কি অপ্রকাশিত অনেক কথার এক আশ্চর্য মাধ্যম হলো চিত্রকর্ম। পরিচয় হয়ে যাক তেমন এক মানুষের সাথে, মেডিকেল নামক কারাগার বা গাইটন, নিটার এর মত ভারী ভারী বই যার চমৎকার এক প্রতিভাকে মেরে ফেলতে পারেনি।
ডেন্টাল টাইমস’র মুখোমুখি হয়েছিলেন এমন একজন মানুষের যিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ও কলেজটির কনজারভেটিভ এবং এন্ডোডন্টিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ মুমিনুল হক। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এই অসাধারণ মানুষটি সম্পর্কে জানা অজানা অনেক কথা উঠে এসেছে আজকের সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিদরা ইকবাল। এবং সহযোগীতায় ছিলেন নিসা আলী। ডেন্টাল টাইমস পাঠকদের জন্য রয়েছে তার সাক্ষাৎকারের মূল অংশ।
আসসালামু আলাইকুম স্যার, কেমন আছেন?
ডাঃ মুমিনুল হক : আমি ভালো আছি। তোমরাও আশা করি ভালো আছো।
আপনার ছোটবেলার বেড়ে উঠার গল্প শুনতে আগ্রহী
ডাঃ মুমিনুল হক : সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করি। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি ছিলাম ৫ম। সিলেট গভঃ হাইস্কুল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এবং এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করি। বাবা পেশায় সিভিল সার্জন হওয়ার সুবাধে বাবা চাইতেন আমি ডাক্তার হই। ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা আর্ট কলেজে ভর্তির সুযোগও পেয়েছিলাম। বাবা মা’র ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত ঢাকা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হই এবং সেখান থেকেই বিডিএস শেষ করি। ছোটবেলা থেকেই ছবি আকার প্রতি ঝোঁক ছিল চরমে। ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে চিত্রকর হবো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে ছিলো অন্য।
ছবি আঁকার হাতেখড়ি কবে থেকে ?
ডাঃ মুমিনুল হক : একদম ছোট বেলা থেকেই ছবি আঁকা শুরু করি। হাতের কাছে কাগজ কলম পেলেই আঁকা শুরু করে দিতাম। যেমনই পারতাম তেমনটাই আঁকতাম।
আপনি কি প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কোথাও ছবি আঁকা শিখেছিলেন ?
ডাঃ মুমিনুল হক: না, আমার ছবি আঁকার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। আমাদের সময়টাতে এইরকম কোনো সুযোগও ছিলোনা। যা শিখেছি তা নিজের চেষ্টাতেই শিখেছি।
ডাঃ মুমিনুল হকের চিত্রকর্ম
বিশেষ কোন চিত্রকর বা তার হাতে আঁকা ছবি যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছিলো ?
ডাঃ মুমিনুল হক : আসলে, আমি সবার ছবি আঁকাই খুব খেয়াল করে দেখতাম। প্রতিটা মানুষেরই তার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে এবং প্রতিটা শিল্পীরই আঁকার ধরণ ভিন্ন। প্রতিটা মানুষেরই আঁকার ধারা চমৎকার। আমার কাছে কেউ ছোট বড় ছিলো না, সবার আঁকা ছবিই আমি মনোযোগ দিয়ে দেখতাম । ম্যাগাজিন, খবরের কাগজ যখন যা পেতাম দেখতাম। আমি আর্ট গ্যালারিতে যেতাম, ছবির প্রদর্শনীতে যেতাম। এখনকার সময়ে এই ব্যাপার খুব সহজ হয়ে গেছে। আমরা চাইলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভালো ভালো শিল্পীর ছবি যখন তখন দেখতে পারি। আমাদের সময় এই সুযোগ ছিলো না।
কি ধরনের ছবি আঁকতে পছন্দ করেন?
ডাঃ মুমিনুল হক : আমি মূলত স্কেচ করতে পছন্দ করতাম। মানুষের মুখ ছবি (পোট্রেট) আমি খুব সহজেই একে ফেলতে পারতাম এবং ব্যাপারটি আমার কাছে খুব ভালো লাগতো। যদিও একটা সময় মা যখন বুঝিয়ে বলেছিলেন, মানুষের ছবি আঁকা ঠিক না, তখন স্কেচ কমিয়ে দিয়েছিলাম।
একটা ছবি শেষ করতে কেমন সময় প্রয়োজন হয় আপনার?
ডাঃ মুমিনুল হক : কোনো কোনো ছবি ১-২ ঘন্টাও লাগে, কোনো কোনো ছবি শেষ করতে ৫দিনও লেগে যায়। যেহেতু আমার কোনো প্রশিক্ষণ নেই, আমি তাই নিজের মত করেই আঁকি।
আমরা জেনেছি, আপনার আঁকা ছবি গুলো নিয়ে বেশ কিছু প্রদর্শনী হয়েছে। প্রদর্শনীর ব্যাপারে জানতে চাই এবং আপনার অনুভূতি কেমন ছিলো?
ডাঃ মুমিনুল হক : হ্যাঁ, এ পর্যন্ত ৪টি প্রদর্শনী হয়েছে ছবি গুলো নিয়ে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমার ছবি গুলো মানুষ কিনেও নেয়। তখন খুব ভালো লাগে এবং অবাক হই যে আমার আঁকা ছবিও বিক্রি হয়! যখন দেখি ছবিগুলো বিক্রি হয় তখন মনে করি, নিশ্চয়ই ছবিগুলো তাদের ভালো লেগেছে৷ এতেই আমি সন্তুষ্ট যে, দর্শক আমার ছবিগুলো পছন্দ করছে।
আপনি তো পেশায় একজন চিকিৎসক ও শিক্ষক। এত ব্যস্ততার মধ্যেও কিভাবে সময় বের করে নেন ছবি আকার জন্য?
ডাঃ মুমিনুল হক : ছবি আঁকা আমার প্যাশন। সময় করে নিতাম এর জন্য। রাতেই ছবি আঁকা হয়, চেম্বার থেকে এসে নামাজের পর ১-২ ঘন্টা করে আঁকা হয়। তবে এই কোয়ারেন্টাইনে অনেক সময় পেয়েছি। অনেক ছবি আঁকা হয়েছে। এছাড়াও, আমি হাতের কাছে যা পাই, তাই দিয়েই কিছু একটা বানানোর চেষ্টা করি। পুরনো জিনিসকে নতুন করে ব্যবহার করতে অনেক ভালো লাগে।
আমরা শুনেছি আপনার চেম্বারটাও বেশ অন্যরকম করে সাজানো, সবার থেকে আলাদা, কেন আলাদা বলে মনে হয়?
ডাঃ মুমিনুল হক : হ্যাঁ, এটা সত্য। আমার চেম্বারে আহামরি দামি কোনো জিনিস নেই। আমি চেষ্টা করি পুরোনো জিনিস কে নতুন বানাতে। আমার সব কিছু একটু গুছিয়ে রাখতে ভালো লাগে। তাছাড়া, আামরা সাবাই জানি ডেন্টালের চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ । একজন রোগী যখন আমার কাছে আসবে, তখন হয়তো সিরিয়াল দিয়ে অনেক সময় বসে থাকতে হয়। তারা যেন বিরক্ত না হয়, মন ভালো থাকে, টেনশন না হয়, তাই এই চেষ্টা।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা পরিস্থিতির সাথে মিল রেখে আপনার আঁকা কিছু ছবি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু বলুন
ডাঃ মুমিনুল হক : আমি চেষ্টা করেছি মানুষের কষ্ট অনুভব করে এবং সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ পাওয়ার আকাঙ্খা সম্পর্কিত কিছু ছবি তুলে ধরার। সবাই বেশ প্রসংশা করেছে।
ডেন্টাল-মেডিকেল শিক্ষার্থীরা মনে করে পড়ালেখার প্রেশারে এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটির জন্য সময় বা সুযোগ থাকেনা। আপনি এই ব্যাপারে কি মনে করেন?
ডাঃ মুমিনুল হক: আমি মনে করি পড়ালেখার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস এ সবারই অংশগ্রহণ করা উচিত। এতে করে পড়ালেখার প্রতি একঘেয়ামি ভাবটা দূর হয়। আমার শিক্ষার্থীদের সাথে আমার খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমি সবসময় ওদের উৎসাহিত করি এইসব করার জন্য। এতে করে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
আপনি কি ছবি আঁকার পাশাপাশি আপনার পছন্দের তালিকায় আর কি কি বিষয় রয়েছে যা আমাদের মাধ্যমে পাঠকদের জানাতে চান ?
ডাঃ মুমিনুল হক : না, ছবি আঁকা ছাড়া তেমন কিছু করিনা। তবে আমি গান শুনতে খুব পছন্দ করি। সবসময় গান শুনি। সব ধরনের গানই আমার ভালো লাগে, তবে রবীন্দ্রনাথ সংগীত আমার সবচেয়ে প্রিয়।
ডেন্টাল টাইমস নিয়ে কিছু বলুন
ডাঃ মুমিনুল হক : ডেন্টাল টাইমস মিডিয়া ইতিমধ্যে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তবে আমি আশা করব তোমাদের কাজ যেনো শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে,মানুষের উপকারও হয় এমন কাজ করবে আশা করি
ধন্যবাদ স্যার আপনাকে আপনার আপনার অত্যন্ত মূল্যবান সময় আমাদের দেয়ার জন্য
ডাঃ মুমিনুল হক : তোমাদেরও ধন্যবাদ। তোমাদের উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করছি।
জাতীয়
না ফেরার দেশে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম
-
জাতীয়3 months ago
আন্দোলনরত এমবিবিএস ও বিডিএস শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ (ভিডিও সহ)
-
জাতীয়3 months ago
চার দফা দাবীতে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
-
পড়ালেখা3 months ago
ঘরে বসেই ক্লিনিক্যাল ডেন্টিস্ট্রি ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন প্রস্তুতি
-
জাতীয়3 months ago
আজ থেকে ৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়