ডেন্টিস্ট সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা বনাম বাস্তবতা … … …
★ শুনলাম ডেন্টালে ভর্তি হইসো! ☞ হ্যাঁ। ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হওয়ার। আব্বু আম্মুরও ইচ্ছা। দোয়া করবেন।
★ হ্যাঁ, তা করবো। কিন্তু, ডাক্তার তো হবা না। ডেন্টিস্ট হবা। ডেন্টিস্ট আবার ডাক্তার হয় ক্যামনে? ☞ গায়নেকলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট এরা ডাক্তার কিভাবে ?
★ হে হে ৷ তোমাদের তো সারা বছর ধইরা খালি দাঁতই পড়ায়। দাঁতের ডাক্তারের আবার অত পড়া কি? পড়া তো মেডিকেলে। ☞ চার-পাঁচ বছর দাঁতের সাথে মানবদেহ, মানবদেহের স্বাভাবিক অস্বাভাবিক আচরণ, অসুখ বিসুখ, ওষুধপত্র প্রায় সবই পড়ানো হয় ডেন্টিস্ট্রি তে। বরং প্রতিটা ইয়ারেই যুক্ত আছে এমন কিছু সাবজেক্ট, যেগুলো মেডিকেলেও পড়ায় না।
★ দাঁতের ডাক্তার। দাঁত খুঁচাইয়া, দাঁত তুইলাই সব টাকা নিয়া যাইবা ! ☞ দাঁতের ডাক্তার শুধু দাঁতই তোলে না। দাঁত ছাড়াও মুখের সার্জারি, অপারেশন ও করে থাকে। এর জন্য আলাদা একটা বিভাগও আছে। ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি। আর ভাল কাজ না জানলে ডাক্তারেরও ইনকাম নাই!
★ তোমাদের দাঁতের ডাক্তার তো দেখি আবার কান্ধে বিপির মেশিন লইয়া ঘুরে! ☞ হ্যাঁ। কারণ, এই বিপির মেশিন ডেন্টিস্ট ব্যবহার না করলে, হাইপ্রেশারের রোগীরা ছোটো খাটো লোকাল অ্যানেস্থেশিয়ায় অক্কা পেত! আর আপনারা ডাক্তারকে একা পেয়ে উত্তম মধ্যম দিয়ে মহাপূণ্যের কাজ করে সাংবাদিক ডাক্তারদের খবর দিতেন!
★ যা হউক, বিসিএস টা দিয়া দিও। সরকারি চাকরি হলেই তো টাকা!!! ☞ সেটা যার যার ইচ্ছা! আমার ইচ্ছা নাই। আমার সাবজেক্টেই জ্ঞান অর্জন করতে চাই।
★ বিদেশ যাইবা না ডিগ্রি আনতে? ☞ আল্লাহ জানেন। বাট, গেলেও পরে আবার ভ্রু কুঁচকে বলবেন না যেন!
★ “দেশের খেয়ে দেশের পড়ে, মেধা পাচার করছে।” ☞ কারণ দেশের টাকায় পড়া ডাক্তার ইন্টার্নির সময়ই জনগণের টাকা পয়সা পুষিয়ে দেয়। আর আমার মত অনেকেই বাবার পয়সায় বেসরকারিতে পড়ে। জনগণের টাকায় না। আর মেধা পাচারের টাকাটাই বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে দেশে ফিরে আসে!
★ আচ্ছা, ডাক্তার হও, ফ্রি চিকিৎসা দিবা। ☞ ছেলের বিয়ে তো ধুমধাম করে দিলেন, দশ লাখ টাকা কাবিন। ঢাকায় সুন্দর একটা ফ্ল্যাট আছে, রুমে এসি। টিভি, ফ্রিজ সবই আছে……
ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিডিএস কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত থাকলেও জাতীয় পর্যায়ে গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ তৈরীর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বহুকালব্যাপী অবহেলিত অবস্থায় ছিল।
এর অবসান ঘটিয়ে ১৭ ই জুলাই ২০২২ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি জিও(সরকারী আদেশ) প্রকাশ করে যেখানে “জনস্বাস্থ্য ডেন্টিস্ট্রি” বিভাগ এবং সেই বিভাগে “সহকারী অধ্যাপক” ও “প্রভাষক” এর পদসৃজন এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এর অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব জনাব হুমায়ূন কবীর বুলবুল ডেন্টাল টাইমসকে জানান – “বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির অংগীকার ও প্রতিশ্রুতি ছিল ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিষয়টিকে নিপসমে ডিপার্টমেন্ট হিসাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় গবেষণায় অন্তর্ভূক্ত করা৷ এরই অংশ হিসেবে আমরা নিপসম এর সম্মানিত পরিচালক অধ্যাপক (ডাঃ) বায়েজীদ খুরশীদ রিয়াজের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে কোর্স কারিকুলামের প্রস্তাবনাও প্রদান করি৷ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অবশেষে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও বিভাগ (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় এর সম্মতিতে জনস্বাস্থ্য ডেন্টিস্ট্রির পদসৃজন হয়েছে।
আমি মনে করি আমাদের ডেন্টাল সার্জনদের জন্যে বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। আপাতত ডেন্টাল পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট চালু হলেও ভবিষ্যতে প্রস্তাবিত নিপসম বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়িত হলে ডেন্টাল পাবলিক হেলথ একটি অনুষদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাবে বলে পরিচালক মহোদয় আমাদের আশাবাদ প্রদান করেছেনএবং তাতে খুলে যাবে ডেন্টাল প্রফেশনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার৷ “
উল্লেখ্য, নিপসমে বর্তমানে ৯ টি বিষয়ে মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ কোর্সটি চলমান রয়েছে৷ যেগুলো হলো – ১) Health Service Management & Policy ২) Hospital Management ৩) Community Medicine ৪) Epidemiology ৫) Reproductive & Child Health ৬) Health Promotion & Health Education ৭) Reproductive & Child Health ৮) Occupational & Environmental health. ৯) Non-Communicable Disease
এছাড়াও অধ্যাপক ডাঃ হুমায়ূন কবীর বুলবুল ডেন্টাল টাইমসকে জানান, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ সহ সরকারী মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটসমূহেও ইতিপূর্বে আমরা ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিভাগের পদসৃজন করেছি।
এক চিকিৎসককে ছুরিকাঘাতের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করলেন সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতি। পরে চাপের মুখে তা অবশ্য ফেরত দিয়েছেন। এর পর থেকে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
গত শনিবার সুনামগঞ্জের ছাতক পৌর শহরের আশা ডেন্টাল কেয়ারে এই ঘটনা ঘটে।
ডেন্টাল কেয়ারের চিকিৎসক সুধীর চন্দ্র রায় জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাতক পৌর শহরের মেডিকেল রোড এলাকার বাসিন্দা সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নয়ন দাশ অপু ও জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হাসান আহমদসহ ছাত্রলীগের ৬-৭ জন ক্যাডার নিয়ে নিয়ে তার ডেন্টাল কেয়ারে হানা দেয়। এ সময় নয়ন দাশ অপু তার সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ সম্বলিত একটি ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অপু তার পকেট থেকে ছুরি বের করে তাকে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তিনি জিম্মি হয়ে পরিস্থিতি বুঝে ১১ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় দেন।
সুধীর চন্দ্র রায় আরও জানান, ঘটনাটি জানাজানি হলে ওইদিন তিনি আইনের আশ্রয়ের প্রস্তুতি নেন। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী বিষয়টি আপোষ মীমাংসার উদ্যোগ নিয়ে তার উদ্যোগে ১১ হাজার টাকা ফেরত এনে দেন।
এ ব্যাপারে ছাতক পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী জানান, প্রথমে নয়ন দাশ অপু ঘটনাটি অস্বীকার করে, পরে আমি নয়নকে মারধর করলে স্বীকার করে। বিস্তারিত সুধীর চন্দ্র রায় বলবেন এর বেশি তিনি বলতে রাজি হননি।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপংকর কান্তি দে যুগান্তরকে বলেন, এ রকম অভিযোগ পাইনি, তবে কেউ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নয়ন দাশ অপু জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সব মিথ্যা। ডেন্টাল কেয়ারের ডেন্টিস্ট সুধীর চন্দ্র রায়ের বিএমডিসির কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। তার (নয়ন দাশ অপু) রাজনৈতিক ছোট ভাইয়ের মায়ের দাঁতের ভুল চিকিৎসা করেন। এ জন্য তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বেশিরভাগ ল্যাবরেটরিতে টেস্টই হয় না। নষ্ট হয় বাক্সবন্দি কোটি কোটি টাকার মেশিনপত্র। ইন্টার্নরাই ভরসা, ডাক্তার মেলে না ওয়ার্ডে। নার্সদের সেবা নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই।
অন্যদিকে কতিপয় কর্মচারী আর দালালদের দৌরাত্ম্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার মান প্রায় তলানিতে। বিশিষ্টজনদের মতে, প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে অসুস্থ হাসপাতালটি নিজেই। যদিও এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের অঙ্গীকারের কথা জানালেন, সদ্য যোগ দেয়া পরিচালক।
বছরে ৬ মাসে পুলিশি অভিযানে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে দালাল ও প্রতারকচক্রের সদস্যরা। কিন্তু কিছু দিন জেলে থেকে বেরিয়ে এসেই দ্বিগুণ উৎসাহে আবারও নামছে পুরোনো ধান্দায়। বাইরের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরির এজেন্ট হিসেবে রোগী শিকারি এ দালালদের দৌরাত্ম্যে প্রতারিত ও সর্বশান্ত হচ্ছে গ্রাম থেকে আসা মানুষ।
তবে এদের থেকে বেশি ভয়ঙ্কর কর্মচারীদের কেউ কেউ। স্ট্রেচারে করে রোগীদের হাসপাতালে আনা নেয়াসহ নামমাত্র সেবা দিয়েই জোর জবরদোস্তি করে টাকা আদায় করছে অসহায় রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে। ৩০ টাকা ফিয়ের বদলে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা দিতে হয় তাদের। ভুক্তভোগীরা বলেন, ট্রলিতে আনতে গেলেই টাকা লাগে। না দিলে কোনোভাবেই ট্রলি দেবে না তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, উল্লেখযোগ্য ল্যাবরেটরিতে টেস্ট হয় না এই হাসপাতালে। হয় নষ্ট, না হয় বাক্সবন্দি কোটি কোটি টাকার মেশিনপত্র। ইন্টার্নরাই ভরসা, ডাক্তার মেলে না ওয়ার্ডে। নার্সদের সেবা নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই। তারা আরও বলেন, যত টেস্ট হয়েছে সেগুলো কোনো মেডিকেল থেকে হয়নি সব বাইরে থেকে হয়েছে।
বিব্রত সরকার দলীয় নেতা, ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও। এই অবস্থার জন্য হাসপাতাল প্রশাসনের বরাবরের নতিস্বীকার প্রবণতাকেই দায়ী করছেন।
জেলা সুজনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফকরুল আনাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি এখানে সেবার নামে প্রতারণ হচ্ছে। সেবা পাওয়ার জন্য অসহায় হয়েই হাসপাতালে যায়। সেখানে ট্রলি থেকে শুরু করে সুস্থ হয়ে বের হয়ে আসা পর্যন্ত প্রত্যেক পর্যায়ে টাকা দিতে হচ্ছে।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বাস্থ্য সেবা কমিটির প্রধান। উনি এই বিষয়ে খোঁজ রাখেন কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমরা যা দেখছি এখানে কোন স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছি না।
পরিস্থিতি পরিবর্তনের অঙ্গীকার করলেন সদ্য যোগ দেয়া হাসপাতালের নবনিযুক্ত পরিচালক। রংপুর মেডিকেলের নবনিযুক্ত পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান বলেন, ৮টা বিভাগ শনাক্ত করেছি যেখানে কেউ এক মাসের বেশি থাকতে পারবে না।
১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটি ২০১০ সালে ১ হাজার শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও এখনও চলছে ৫শ’ শয্যার লোকবলে। গড়ে প্রতিদিন আউটডোরে ৩ হাজার এবং ১৮শ’ থেকে ২২শ’ রোগী ভর্তি থাকছে ইনডোরে।
ডা. মাহমুদুল হাসান ৩২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী ডেন্টাল সার্জন হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ওএসডি কর্মকর্তা হিসেবে কোর্সে যুক্ত হন তিনি। এমন সময়ে বিএসএমএমইউতে সহকারী অধ্যাপকের শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে তিনি সেখানে আবেদন করেন। তার ওই আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর প্রতি পদক্ষেপে ত্রুটি থাকলেও বর্তমানে তিনি ওই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদনপত্র জমাদানের শেষ সময় ছিল একই বছরের ২ মার্চ। ডা. মাহমুদ বিএসএমএমইউর সহকারী অধ্যাপক পদে আবেদন করতে ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বরাবর অনুমতি চান। তার ওই আবেদন ফরোয়ার্ডিং করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কাজী বিল্লুর রহমান। অথচ মজার বিষয় হলো, অধ্যাপক বিল্লুর ওই আবেদন ফরোয়ার্ডিং করেন ২০২০ সালের পহেলা মার্চ তারিখ উল্লেখ করে। অর্থাৎ আবেদনের তারিখের প্রায় এক বছর আগের তারিখে ফরোয়ার্ডিং করা হয় এবং এই ত্রুটিপূর্ণ আবেদন গৃহীতও হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে অধ্যাপক ডা. কাজী বিল্লুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি দেশের বাইরে থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি। একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আলী আসগর মোড়লকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, ডা. মাহমুদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএসএমএমইউর ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগ থেকে এমএস পাস করেন। অথচ আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি এমএস সম্পন্ন করেছেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। আবেদনপত্রের সংযুক্তিতে তিনি নিজের তিনটি প্রকাশনা থাকার কথা উল্লেখ করেছেন; যার একটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জে ডেন্ট ওরাল হেলথ’ নামের জার্নালে। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওই নামে কোনো জার্নাল নেই। এ ছাড়া একটি কেস প্রেজেন্টেশনও তিনি পাবলিকেশন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যা গ্রহণযোগ্য নয়।
মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের আবেদন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম বলেন, ওএসডি কোনো চিকিৎসক কর্মকর্তাকে কোথাও আবেদন করতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। অধিদপ্তরের ফরোয়ার্ডিংয়ের মাধ্যমে আবেদন সচিবের দপ্তরে পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ছাড়া অন্য কারও ফরোয়ার্ডিং করার সুয়োগ নেই।
ডা. মাহমুদের আবেদনপত্রের কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, তার ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি এমএস কোর্সের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শর্তানুসারে বিএমডিসির হাল নাগাদ নিবন্ধন জমা দিতে হবে। সেই শর্ত পূরণে তিনি বিএমডিসির সনদ পেয়েছেন ২০২১ সালের ১ মার্চ। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুসারে তিনি একই দিনে অর্থাৎ ২০২১ সালের ১ মার্চ পূবালী ব্যাংকের অনুকূলে এক হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এক কর্মকর্তা ডা. মাহমুদের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বলেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তার আবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরোয়ার্ডিং করতে পারেন না। তা ছাড়া এই আবেদনকারীর কাগজ দেখে মনে হচ্ছে, তাকে আবেদন করার সুযোগ দিতেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এবং বিএমডিসির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সম্পন্ন হয়। একটি দল আবেদনকারীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। একদল পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করে। তারপর মূল্যায়ন হয় এবং নির্বাচিতদের তালিকা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়। তবে এই নিয়োগের বিষয়ে জানতে তিনি বর্তমান রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে ডা. মাহমুদুল হাসানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কোরিয়ার ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতবিনিময় সভা রোববার (৭ আগস্ট) ফৌজদারহাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান ও ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ সিস্টেম এর অধ্যাপক ডা. সিনকি অন মতবিনিময় সভায় নেতৃত্ব দেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান বাংলাদেশের মেডিক্যাল ও নার্সিং কারিকুলাম এবং শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কেইপিজেড এলাকায় বড় পরিসরে মেডিক্যাল হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে সভায় অবহিত করা হয়।
অধ্যাপক সিনকি অন বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তারা কাজ করতে আগ্রহী। ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয় নার্সিং এর অধ্যাপক টুই লি, অধ্যাপক সু জিং লি, অধ্যাপক জে ওই কিম ছাড়াও ইনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ফ্যাকাল্টি মেম্বাররা সভায় উপস্থিত ছিলেন। ইয়ং ওয়ান গ্রুপের জেনেরাল ম্যানেজার কর্নেল (অব.) শাহজাহান সভায় যোগ দেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আখতার, বেসিক সাইন্স এর ডিন অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম, নার্সিং ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনোয়ারুল হক শামীম, ডেন্টাল ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ডা. আকরাম পারভেজ চৌধুরী, মা ও শিশু মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোশতাক হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ জয়, অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা, বিআইটিআইডির পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নাসিরউদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. দেলোয়ার হোসেন, রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হাসিনা নাসরিন, উপ-পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, উপ-কলেজ পরিদর্শক ডা. আইরিন সুলতানাসহ সংশ্লিষ্টরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।