ডাঃ এহসানুল হক অপু ফিনল্যান্ডের University of Oulu থেকে ওরাল প্যাথোলজিতে পিএইচডি করছেন। সম্প্রতি তিনি BADI এর কংগ্রেসে যোগ দিতে দেশে এসেছিলেন। ডেন্টাল টাইমসের সাথে এক সাক্ষাতকারে দেশের বাইরে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ডেন্টাল টাইমস: ভাই কেমন আছেন? ডাঃ এহসানুল হক অপু – এই তো বেশ ভালো। তোমাদের কি খবর?
ডেন্টাল টাইমস: আমরাও ভালো আছি ভাই। আপনি যদি আপনার একাডেমিক জীবন ও কর্মজীবন নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করতেন। ডাঃ এহসানুল হক অপু: আমি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে ২০০১ সালে এস এস সি, সেন্ট যোসেফ কলেজ থেকে ২০০৪ সালে এইচ এস সি পাশ করি। এর পর আমি BDC-09 ব্যাচের সাথে বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হই। ফেব্রুয়ারি ২০১০ এ আমি বিডিএস পাশ করি। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের কুইন মেরী ইউনিভার্সিটি থেকে ওরাল প্যাথোলজিতে মাস্টার্স করি। ২০১৪ থেকে ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওলুতে ওরাল প্যাথোলজিতেই পিএইচডি করছি। আমার স্ত্রী ও একই ইউনিভার্সিটিতে পাবলিক হেলথে পিএইচডি করছে।
ডেন্টাল টাইমস: আমরা জানি দেশে ডেন্টালের ব্যাসিক সাবজেক্ট গুলোতে ক্যারিয়ার গড়ার স্কোপ খুবই কম। ব্যাসিক সাবজেক্ট গুলোতে ক্যারিয়ার করতে আমাদের দেশের বাইরেই আসতে হয়। দেশের বাইরে কোন কোন সাবজেক্টগুলোতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ বেশি। ডাঃ এহসানুল হক অপু – ব্যাসিক সাবজেক্টগুলোর নাম বললে প্রথম দিকেই আসবে পাবলিক হেলথ, ওরাল প্যাথোলজি, ফরেনসিক ওডোন্টোলজি, বায়োকেমিস্ট্রির কথা। ডেন্টাল রেডিওলজিতে এখন খুব একটা নিতে চায় না। এছাড়াও গ্লোবাল পাবলিক হেলথ আমার কাছের দুইজন জুনিওর সুইডেনে এস আই স্কলারশিপপে মাস্টার্স করছে। এছাড়াও ডেন্টিস্টদের বায়োটেকনোলজিতে মাস্টার্স করার সুযোগ আছে সুইডেনে।
ডেন্টাল টাইমস: আপনি মাস্টার্স করার জন্য কেন ইউরোপকে বাছাই করলেন যেখানে প্রথাগতভাবে সবাই জাপানকে প্রথমে রাখে? ডাঃ এহসানুল হক অপু – আসলে আমি শুরুতে জাপানের কথাই ভেবেছিলাম। কিন্তু আমাদের সময় ফুকুশিমা রিএক্টর দুর্ঘটনার কারনে স্টুডেন্ট নেয়া বন্ধ ছিল। এখনকার মতন মালয়েশিয়া কিংবা থাইল্যান্ডের মতন ট্রেন্ড ও ছিল না। এইজন্যই ইউরোপের দিকে ঝুকলাম। সুইডেনের ২ বছরের মাস্টার্স তুলনায় ইংল্যান্ডের একবছরের মাস্টার্স আমার কাছে বেশি সুবিধাজনক মনে হল।
ডেন্টাল টাইমস: ব্যাসিক সাবজেক্টে ক্যারিয়ার করার জন্য একজন শিক্ষার্থীর কিভাবে প্লান করে আগানো উচিত? ডাঃ এহসানুল হক অপু – আগে নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমি কিসে ক্যারিয়ার গড়তে চাই। মোটামুটি থার্ড প্রফের পরেই নেটে সার্চ করা শুরু করা উচিত। ভেবে দেখা উচিত আমি মাস্টার্স করেই থামবো নাকি মাস্টার্সের পর পিএইচডি ও করব। যে বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাই সে বিষয়ে বেসিক স্কিল থাকা উচিত। যেমন ওরাল প্যাথোলজিতে এপ্লাই করার আগে আমি একটা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবে ৩ মাস ইন্টার্নশিপ করেছি। বায়োপসি, স্লাইডিং, গ্রাম স্টেইনিং এসব জিনিস শেখা ছিল আমার। আমার সিভিতে এটা উল্লেখ থাকায় ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল আমি ওরাল প্যাথোতেই ক্যারিয়ার গড়তেই চাই। তারা নিশ্চয় চাবে না কেও বেসিকে ডিগ্রী নিয়ে পরে দেশে এসে ক্লিনিক্যাল প্র্যাক্টিস করুক।নিজের প্যাশন তাদের বুঝাতে হবে। এছাড়াও আমি ফরেনসিক ওডোন্টোলজিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম ইউনিভার্সিটি অব গ্লামারগনে। ফরেনসিকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বয়স নির্ণয় কোর্স হেল্প করতে পারে।
ডেন্টাল টাইমস: একজন স্টুডেন্ট নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করবে বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য।? ডাঃ এহসানুল হক অপু – প্রথমেই যে ফ্যাক্টর সামনে আসে তাহল ল্যাংগুয়েজ স্কিল। IElTS স্কোর সব দেশে একরকম চায় না। কিন্তু ভালো স্কোর এডমিশনে অনেকটা আগায় দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন অফিস থেকে একটা চিঠি ইস্যু করে নেয়া যায় যে His/Her course was taught in English.এই চিঠি পরে খুবই কাজে দেয়। তারপর যেটা আসে সার্টিফিকেট এক্রিডেশন। এটা এপ্লাই করা ভার্সিটির রেকমেন্ড অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অফিস থেকে করে নিতে হবে। এই জন্য কিছু ফি নেয়া হয়। তারপর কপি নিয়ে জমা দিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে, এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে।এই পুরো প্রসেস তাই ফ্রি। কিন্তু দালালরা টাকার বিনিময়ে করে দিতে চাবে। দালালদের এড়াই চলাই ভালো। তারা অনেকসময় ঠিক মতন এন্ট্রি করে না। তারপর মেডিসিন ফ্যাকাল্টির প্রধানের সুপারিশপত্র। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দুইজন প্রফেসরের রেকমেন্ড লেটার। সাথে সাথে স্কিল গুলোর সার্টিফিকেট। রিসার্চ মেথোডোলজি,এসপিএসএস,মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন এসব বিষয়ে স্কিল থাকা জরুরী। পাবলিকেশন থাকলে ভালো হয়।
ডেন্টাল টাইমস: দেশের বাইরে যারা থাকেন তাদের নিয়ে অনেক দেশের কমিউনিটি থাকে।যেমন ভারতের ডেন্টাল সার্জনদের বেশ বড় একটা প্লাটফর্ম আছে বাংলাদেশীদের বেলায় কি এরকম কোন প্লাটফর্ম আছে বা তৈরী করার কোন পরিকল্পনা আছে আপনাদের।? ডাঃ এহসানুল হক অপু- আমরা যারা বাংলাদেশ ডেন্টাল থেকে দেশের বাইরে তাদের একটা প্লাটফর্ম আছে। আমরা বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজে এই নিয়ে সেমিনার ও করেছি। আমাদের একটা স্কাইপে গ্রুপ ও মেইল আইডি আছে। স্কাইপে তে BDC.Graduate Careers এবং মেইল bdc.graduatecareers@gmail.com এ কেউ নক দিলে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি।এছাড়াও আমাদের ভবিষ্যতে দেশে ক্যারিয়ার গাইডলাইন সেমিনার করার ইচ্ছা আছে।
ডেন্টাল টাইমস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? ডাঃ এহসানুল হক অপু – আমার ইচ্ছা আছে উত্তর আমেরিকায় পোস্ট ডক্টরালে ক্যান্সার মেডিসিন নিয়ে কাজ করার।
ডেন্টাল টাইমস; নতুন প্রজন্মের ডেন্টাল সার্জনদের জন্য আপনার কোন পরামর্শ আছে? ডাঃ এহসানুল হক অপু – হ্যা। আমি তাদের বলব যারা বাইরে যেতে চান বসে না থেকে এখনই কাজে নেমে যেতে।যদি বাইরে মাস্টার্স সম্ভব না হয় দেশেই মাস্টার্স করে বাইরে পিএইচডি এর জন্য চেষ্টা করুন। দেশের বাইরে অনেক স্কোপ আছে। আমরা চাই ডেন্টিস্ট্রি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ুক।
ডেন্টাল টাইমস: ডেন্টাল টাইমসের উদ্দেশ্যে যদি আপনি কিভাবে দেখেন? ডাঃ এহসানুল হক অপু – ডেন্টাল টাইমসের কাজ অবশ্যই প্রশংসনীয়। বিশেষ করে দেশের ডেন্টিস্ট্রিতে কখন কি ঘটছে তা একবার চোখ বুলালেই জানা যাচ্ছে। তবে ডেন্টাল টাইমসের কাছে আমার বিশেষ আবেদন থাকবে নিয়মিত পত্রিকা বের করতে এবং সেমিনার আয়োজন করার। এতে সবার জন্যই উপকার হবে।
ডেন্টাল টাইমস: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। এতো ব্যাস্ততার মধ্যেও আমাদের সময় দেয়ার জন্য। ডাঃ এহসানুল হক অপু – তোমাদেরও অনেক ধন্যবাদ।
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীতে দেশে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন আসতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আজই হয়তো এর ডিক্লিয়ারেশন আসতে পারে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিভিন্ন টাইপের লকডাউন আসবে।’
সেটা কেমন হবে জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দারবানে যাওয়া আসা বন্ধ হবে। বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিক, ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশনা আসতে পারে। যেখানে জনসমাগম হয় সেসব জায়গায় রেস্ট্রিকশন আসতে পারে-এভাবেই বিভিন্ন ধরনের রেস্ট্রিকশন আসবে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ের প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ২২ দফার যে প্রোপোজাল গেছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেখে যেটা ভালো মনে করবেন সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকবে।’
প্রস্তাবানার মধ্যে আছে:
১. সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কমিউনিটি সেন্টার/কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে/জন্মদিন/সভা/সেমিনার ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।
২. বাড়িতে বিয়ে/জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা (ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫-এর অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০-এর অধিক নয়)।
৪. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার ও সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘বিটকরোনা’ নামের করোনা শনাক্তকারী কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা টুল তৈরি করেছে দেশি সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইজেনারেশন । তাদের দাবি, করোনাবট এবং এক্স-রে ইমেজ অ্যানালাইসিস টুল উন্নত উপায়ে ও দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না, তা নিজে থেকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
ইজেনারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবহারকারী নিজেই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাতে নিতে পারেন, এ জন্য ইজেনারেশন করোনাবটকে সেলফ-টেস্টিং টুলস হিসেবে তৈরি করেছে। এটি ব্যবহারকারীকে নিজে থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে আইসোলেশনে থাকতে উৎসাহ দেয়।
এটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময় বাঁচাতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন বুঝতে পারা এবং সেটির যথাযথ উত্তর দেয়ার জন্য করোনাবটটিতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়েছে। বটটি ইংরেজি, বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে ইংরেজি অক্ষরে লেখা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
এর পাশাপাশি ইজেনারেশন মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রে ছবি বিশ্লেষণী টুল তৈরি করেছে যা বুকের এক্স-রে ছবি দেখে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে কার্যকর হতে পারে। এই টুল ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সুস্থ আছেন কিনা, মৃদু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা অথবা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটি জানা যাবে। ইজেনারেশন বিটকরোনা (http://beatcorona.egeneration.co/) ওয়েবসাইটে গিয়ে এক্স-রে ছবি আপলোড করলে টুলটি ফলাফল দেখাবে
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘ইজেনারেশন বিগত দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার ও অ্যানালিটিক্স নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির যে সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই সল্যুশনগুলি আমরা স্বল্প সময়ে তৈরি করতে পেরেছি।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নারীসহ আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামাড়পাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের এক নারী ও জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা গ্রামের ৩০ বছরের এক যুবক।
আক্রান্ত ওই নারী ঢাকায় বোনের বাসায় এবং যুবক ঢাকায় জুয়েলারি দোকানে থাকতেন। ২৬ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান। এরমধ্যে তাদের ওই দুইজনের করোনা পজিটিভ ও চারজনের নেগেটিভ আসে বলে স্বাস্থ্যকর্মী এজাজুল হক হাসান রাত সাড়ে এগারোটায় জানিয়েছেন।
এর আগে ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের পলি ক্লিনিকের সিনিয়র ওটি বয় অখিল চন্দ্র সরকারের করোনা পজিটিভ হলে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে ২৪ এপ্রিল বাড়ি আসেন।
এ পর্যন্ত মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে ১৪৯ জনের করোনা নেগেটিভ ও ৩ জনের পজিটিভ আসে।
উপজেলা প্রশাসন রাতেই তাদের ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো এবং আশপাশের অর্ধশত বাড়ি লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
চিকিৎসক-নার্সসহ ৬৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী মরণব্যাধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সংগঠনটির মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে বাংলাদেশও গভীর সংকটের সম্মুখীন। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫২ জন।
এতে আরও বলা হয়েছে, করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সেবাদানকারীগণ আশঙ্কাজনকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২৯৫ জন চিকিৎসক, ১১৬ জন নার্স ও ২৪৯ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬০, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবাদানকারী ব্যক্তিগণ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামীতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত প্রস্তাবনাসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় বিএমএ। এগুলো হলো:
১. দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সঠিক মানের পিপিই, এন-৯৫ বা এর সমমানের মাস্ক প্রদান করা জরুরি। ২. নন-কোভিড হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে ট্রায়াজ সিস্টেম চালু করে সেখানে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত পিপিই, এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক প্রদান নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। ৩. সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশে মহামাহারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৫২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯৭ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫২ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩১ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ সাত হাজার। তবে পৌনে নয় লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।