আসন খালি থাকা সাপেক্ষে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মাস্টার্স কোর্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নয়। মঙ্গলবার (৩০আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
ডিনস কমিটির মিটিংয়ে ঢাবি ছাত্র ছাড়াও অন্য শিক্ষার্থী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কোর্সে ভর্তি নিয়ম চালু করেছে বলে মঙ্গলবার কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আমরা বেশ কিছু নতুন নীতিমালা তৈরি করার কথা ভাবছি, যা প্রক্রিয়াধীন। মাস্টার্সের আসন খালি থাকা সাপেক্ষে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মাস্টার্সের ভর্তির সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছি।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও আমাদের যেসব শিক্ষার্থী অনার্স শেষ করে মাস্টার্স নিয়ম অনুযায়ী শেষ করতে পারেনি, চাকরিতে যোগদান করেছে তাদেরও নিয়মিত মাস্টার্সে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছি। বিষয়গুলো এখনও চূড়ান্ত নয়, প্রক্রিয়াধীন।
ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিডিএস কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত থাকলেও জাতীয় পর্যায়ে গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ তৈরীর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বহুকালব্যাপী অবহেলিত অবস্থায় ছিল।
এর অবসান ঘটিয়ে ১৭ ই জুলাই ২০২২ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি জিও(সরকারী আদেশ) প্রকাশ করে যেখানে “জনস্বাস্থ্য ডেন্টিস্ট্রি” বিভাগ এবং সেই বিভাগে “সহকারী অধ্যাপক” ও “প্রভাষক” এর পদসৃজন এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এর অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব জনাব হুমায়ূন কবীর বুলবুল ডেন্টাল টাইমসকে জানান – “বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির অংগীকার ও প্রতিশ্রুতি ছিল ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিষয়টিকে নিপসমে ডিপার্টমেন্ট হিসাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় গবেষণায় অন্তর্ভূক্ত করা৷ এরই অংশ হিসেবে আমরা নিপসম এর সম্মানিত পরিচালক অধ্যাপক (ডাঃ) বায়েজীদ খুরশীদ রিয়াজের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে কোর্স কারিকুলামের প্রস্তাবনাও প্রদান করি৷ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অবশেষে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও বিভাগ (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় এর সম্মতিতে জনস্বাস্থ্য ডেন্টিস্ট্রির পদসৃজন হয়েছে।
আমি মনে করি আমাদের ডেন্টাল সার্জনদের জন্যে বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। আপাতত ডেন্টাল পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট চালু হলেও ভবিষ্যতে প্রস্তাবিত নিপসম বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়িত হলে ডেন্টাল পাবলিক হেলথ একটি অনুষদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাবে বলে পরিচালক মহোদয় আমাদের আশাবাদ প্রদান করেছেনএবং তাতে খুলে যাবে ডেন্টাল প্রফেশনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার৷ “
উল্লেখ্য, নিপসমে বর্তমানে ৯ টি বিষয়ে মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ কোর্সটি চলমান রয়েছে৷ যেগুলো হলো – ১) Health Service Management & Policy ২) Hospital Management ৩) Community Medicine ৪) Epidemiology ৫) Reproductive & Child Health ৬) Health Promotion & Health Education ৭) Reproductive & Child Health ৮) Occupational & Environmental health. ৯) Non-Communicable Disease
এছাড়াও অধ্যাপক ডাঃ হুমায়ূন কবীর বুলবুল ডেন্টাল টাইমসকে জানান, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ সহ সরকারী মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটসমূহেও ইতিপূর্বে আমরা ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিভাগের পদসৃজন করেছি।
দাঁতের চিকিৎসার সময় অনেকেই ভুলে যান যে দাঁতের সাথে আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গ জড়িত তাই অনেক সময় চিকিৎসক কে সব কিছু খুলে বলার প্রয়োজন মনে করেন না আবার সংরক্ষণশীল সমাজের অংশ হিসেবে অনেকে লজ্জায় অনেক তথ্য গোপন করে যান ।যার ফলে চিকিৎসা প্রদানে অনেক ক্ষেত্রেই বিরূপ পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয় ডাক্তার এবং রোগী উভয়কেই। আজ আপনাদের এমন কিছু সাধারন বিষয় নিয়ে আলোকপাত করবো যেগুলো চিকিৎসককে জানানো খুব প্রয়োজনীয় ।
আপনি যদি গর্ভবতী হন অথবা গর্ভ ধারণের জন্য চেস্টারত হনঃ
জেনে রাখবেন গর্ভের সন্তানের জন্য অধিকাংশ ব্যাথার ওষুধ ক্ষতিকর। একজন গর্ভবতী মায়ের সাথে দুইটি জীবন জড়িয়ে থাকে, তার মধ্যে গর্ভস্থ যে শিশুটি তার জন্য অনেক ধরনের ওষুধ বিষ হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের অবশ্যই জানানো উচিত উনার কত সপ্তাহ চলছে। এতে চিকিৎসক নিরাপদ ওষুধ প্রদান করবেন এবং এক্স-রে কিংবা অন্যান্য কার্যপ্রণালী নির্বাচনে সতর্ক থাকতে পারবেন। দাঁতের রোগীরা বেশির ভাগ সময় ব্যাথা নিয়ে আসেন। অনেকে ফার্মেসী থেকে ব্যাথার জন্য ইটোরিক্স জাতীয় ওষুধ কিনে খান । জেনে রাখবেন গর্ভের সন্তানের জন্য অধিকাংশ ব্যাথার ওষুধ ক্ষতিকর। আপনার সন্তান যদি বুকের দুধ খায় সেটাও ডেন্টাল সার্জনকে অভিহিত করবেন কারন কিছু ওষুধ বুকের দুধের সাথে নিঃসরণ হয়- যা শিশুর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক দম্পতি আছেন গর্ভধারণের জন্য চেস্টায় আছেন কিন্তু এখনো পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন নাই। এমন মহিলাদের উচিত চিকিৎসককে এটা অবহিত করা। কারন গর্ভ ধারনের পরে প্রথম ৩ মাস অনেক সতর্ক থাকতে হয় ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে।
আপনার যদি কোন ক্রনিক রোগ যেমন – ডায়াবেটিকস, ব্লাড প্রেসার, এ্যাজমা ইত্যাদি থাকেঃ
প্রেসারের রোগিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তপাত একটি সাধারন সমস্যা
ডায়াবেটিকস এর রোগীদের মাড়ির ইনফেকশন বেশি হয় এবং ডায়াবেটিকস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে শরীরের যেকোন ক্ষত শুকাতে চায়না। সুতরাং আপনার যদি ডায়াবেটিকস থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তার কে অবহিত করুন। অনেক ক্ষেত্রেই ইনফেকশন বেশি বা অনিয়ন্ত্রিত সুগার এর রোগিদের এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে ইনফেকশন কমিয়ে তারপর দাঁত তোলা বা অন্যান্য দাঁতের চিকিৎসা করা হয়। প্রেসারের রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তপাত একটি সাধারন সমস্যা। সেই সাথে আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টোরল এর সমস্যা থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা রক্ত পাতলা করার উপাদানযুক্ত ওষুধ যেমন ইকোস্প্রিন, Clopidogrel, warfarin ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। এই জাতীয় ওষুধগুলো দাঁত তোলা বা যেকোন অস্ত্রোপচারের অন্তত ৫ দিন আগে থেকে বন্ধ না রাখলে সার্জারির পরে রক্তপাত বন্ধ করা কঠিন হয়ে যায়। কিডনির রোগে আক্রান্ত রোগীদের অনেক ওষুধ দেয়া যায় না। তাই আপনি যদি নিয়মিত কোন ওষুধ খান সেগুলোর প্রেস্ক্রিপশন ডেন্টাল সার্জনকে দেখাবেন এবং আপনার সকল রোগের ব্যাপারে উনাকে অভিহিত করবেন ।
আপনার মেডিকেল ইতিহাস : কোনদিন কোন দুর্ঘটনায় কেটে যাবার পরে আপনার কি রক্তপাত বন্ধ হতে অনেক সময় নিয়েছিলো? ছোটবেলায় মুসলমানির পরে কি অতিরিক্ত রক্তপাত হয়েছিলো? যদি এমন অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে তবে হয়তো আপনার রক্তপাত জনিত জটিলতা (Bleeding disorders) থাকতে পারে। আগে থেকে জানা না থাকলে এটা একটা দুঃস্বপ্নের মতো পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে সার্জন এবং রোগী উভয়কেই। তাই এধরনের ইতিহাস ডাক্তারের কাছে খুলে বলা জরুরী। এক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাবস্থা এবং সতর্কতার সাথে অপারেশন করা হয়। এছাড়াও কোন বড় অপারেশন হয়ে থাকলে , অতীতে কোন বিশেষ ওষুধ খাবার পরে এলার্জি বা অসুবিধা হয়ে থাকলে, ক্যান্সারের রোগী , কোন সংক্রমন ব্যাধি যেমন- হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদি থাকলে অবশ্যই জানানো উচিত। অনেক সময় কেমো-রেডিও থেরাপীর রোগী দাঁত তুলতে আসেন – কিন্তু রেডিয়েশনের প্রভাবের কারনে সেই দাঁত স্বাভাবিকভাবে তোলা অসম্ভব হয়ে যায়। হেপাটাইটিস বা এইডস রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাবস্থা নিতে হয় যেন জীবানু না ছড়ায়। এসব গোপন করলে রোগী এবং সমাজের সকলেরই ক্ষতি হয়।
আপনার কোন বদ অভ্যাস থাকলেঃ সিগারেট খেলে আমাদের মুখের ভেতরের যেকোন ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হয় একবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এক রোগীর দাঁত তুলার জন্য চেতনা নাশক ইঞ্জেকশন কিছুতেই কাজ করছিল না। যতটুকু দেয়া যায় পুরোটাই দিয়ে অবশ করতে ব্যর্থ হবার পরে রফিকুল্লাহ স্যারকে ডাকতে বাধ্য হলাম। স্যার রোগী কে বললেন- “ দুই জাতের মানুষের কাছে কখনো মিথ্যা বলতে হয়না – এক উকিল আর দুই ডাক্তার, এখন বলেন কি খান ?” রোগী জানালো সে হেরোইনসেবী এবং আসার আগেও খেয়ে এসেছে ব্যাথা লাগবে না এই আশায়। সুতরাং যেকোন ধরনের নেশা সেটা সিগারেট থেকে হেরোইন পযন্ত যাই হোক না কেন ডাক্তারের কাছে লুকানো যাবে না। সিগারেট খেলে আমাদের মুখের ভেতরের যেকোন ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হয়। এভাবে প্রতিটা নেশা উপাদানেরই কিছু না কিছু প্রভাব আছে যা ডেন্টাল সার্জন রা বুঝতে পারেন , রোগী বললে ডায়াগনোসিস আরো সুবিধা হয়। এছাড়া দাঁত দিয়ে নখ কাটা, সুতা কাটা, ড্রিংসের বোতলের মুখ খোলা এসব বদ অভ্যাসের প্রভাব দাঁতের উপর পরে। সুতরাং স্থায়ী সমাধানের জন্য এসব অভ্যাস গোপন না করে ডাক্তারের কাছে জানানোই বুদ্ধিমানের কাজ।
লেখকঃ ডাঃ মোঃ আরিফুর রহমান বিডিএস, এমপিএইচ প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক ও ডেন্টাল ইউনিট প্রধান, নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ চীফ কন্সালটেন্ট , হলি ডেন্টাল কেয়ার , চৌহাট্টা , সিলেট BMDC Reg. 2274 drarifur_rahman@yahoo.com
৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (২২ জুন) কমিশনের বিশেষ সভায় প্রিলিমিনারি টেস্টের ফলাফল অনুমোদন করা হয়। এদিন বিকালে সরকারি কর্মকমিশন-পিএসসি’র বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য সরকারি কর্ম কমিশন থেকে মোট ১৫ হাজার ৭০৮ জন প্রার্থীকে সাময়িকভাবে যোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে অনুষ্ঠিত ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্টে মোট ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬০ জন প্রার্থী অংশ নেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফলাফল কমিশনের ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bd এবং টেলিটকের ওয়েবসাইট http://bpsc.teletalk.com.bd এ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমেও জানা যাবে।
যেভাবে ফলাফল পাওয়া যাবে
যেকোনও মোবাইল থেকে এসএমএস করে ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্টের ফল জানা যাবে। PSC<Space>44<Space>Registration Number লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে Registration Number সহ Qualified, অথবা Not qualified হিসেবে ফল পাওয়া যাবে।
যেমন- PSC 44 123456 send to 16222। লিখিত পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট তারিখ ও সময়সূচি পরবর্তী সময়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আজ ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এ কম্পোজিট পাবলিকেশনস এর ডাঃ বিদ্যুৎ কুমার সূত্রধর রচিত বিডিএস ৩য় ফেইজ এর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে পেরিওডন্টোলজী এন্ড ওরাল প্যাথলজী বিষয়ের সহায়ক বই
“পেরিওডন্টোলজী এন্ড ওরাল প্যাথলজী-২০২২ সংষ্করণ “ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হুমায়ূন কবীর ও বইটির প্রকাশক ডাঃ বিদ্যুৎ কুমার সূত্রধর(ডিডিএস-অন কোর্স, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল,ঢাকা)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিডিএস বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বইটির ছবি সংবলিত কেক কেটে ও মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে বইটি সবার জন্যে উন্মুক্ত করা হয়। বইটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. বিদ্যুৎ ডেন্টাল টাইমসকে জানান- “পেরিওডন্টোলজী ও ওরাল প্যাথলজী ডেন্টাল সার্জনদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই শিক্ষার্থীদের জন্যে সম্পূর্ণ নূতন কারিকুলাম অনুযায়ী চিত্রসহ ব্যাখ্যা,প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে MCQ প্রশ্ন, কাউসন ও ক্যারেঞ্জার আধুনিক সংষ্করণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বইটিতে রাখার চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ডাঃ হুমায়ুন কবীর বুলবুল ডেন্টাল টাইমসকে জানান, “ডাঃ বিদ্যুৎ ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতার জন্যে গত দুই দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। আমাদের দেশে ডেন্টাল বই এর লেখকের সংকট রয়েছে। আমাদের শিক্ষকবৃন্দ এই বিষয়ে ভাল বইয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। আমি সমাপনী বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানতে পারি শিক্ষার্থীরা বইটিকে প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী হিসেবেই আখ্যা দিয়েছে। কাজেই আমি মনে করি এই বইটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে এবং ডাঃ বিদ্যুৎ এর এমন উদ্যোগের সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করি।
প্রায় ৮০০ পৃষ্ঠার কালার এটলাস সহ বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে পূর্ববর্তী পেশাগত পরীক্ষার প্রশ্ন সংবলিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বইটির পুনঃপরীক্ষণ করেছেন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হুমায়ূন কবীর বুলবুল। বইটি নীলক্ষেতের সকল দোকানে পাওয়া যাবে।
ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি দারুণ সিরিয়াস নাসরিন সুলতানা ইভা। পড়তে চেয়েছিলেন ইংলিশ ভার্সনের স্কুল-কলেজে, কিন্তু নিজ জেলা শহরে এর সুবিধা না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই ভর্তি হন বাংলা ভার্সনে। ইভা লেখাপড়া করেছেন মুন্সিগঞ্জের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ-এ। সেখান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। এরপর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাতেও ছিলেন সপ্রতিভ।
২০২২ সালের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে ৫০ তম স্থান অধিকার করেন। তবে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছেন তিনি ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায়। যেখানে অংশ নিয়েছিল প্রায় ৬৬ হাজার শিক্ষার্থী। ইভা সেই পরীক্ষাতে ভালো তো করলেনই, সাথে প্রথম হওয়ার গৌরব দেখালেন।
ইভা তখন অষ্টম কি নবম শ্রেণিতে পড়েন। মেডিকেলে উত্তীর্ণ আপুদের উৎফুল্লতা, তাদের ঘিরে অন্যদের উৎসব-উন্মাদনা চোখের সামনে দেখতেন। সেই থেকে এ বিষয়গুলোর প্রতি ভালো লাগার শুরু তার। পড়ালেখার সময়ে কঠোর অধ্যবসায়, আর অবসরে কল্পনার রঙিন জগতে মেডিকেলের শিক্ষার্থী হিসেবে ঘুরে বেড়ানো ইভার জন্য তখন থেকে নিত্যদিনের ঘটনা। এভাবেই ভালো লাগা থেকে ভালো করার আকাঙ্ক্ষা; তৈরি হতে থাকে স্বপ্ন পূরণের এক মহা বন্দোবস্ত।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা, তাহলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে! এ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। আবার, কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার। তখন অনলাইনে নতুন শিক্ষা পদ্ধতির সাথে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগেছিল ইভার। তবে সব প্রতিবন্ধকতার মাঝেও তিনি ছিলেন শৃঙ্গের মতো দৃঢ়। এক মুহূর্তের জন্যও আত্মবিশ্বাস হারাননি, নিজের সাথে আপোষ করেননি কোনো বিষয়ে। ফলস্বরূপ, সাফল্যের হাসি।
৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষা আশানুরূপ হয়েছিল, ভালো কোনো মেডিকেলেই যে সুযোগ পাচ্ছেন, তা আগে থেকে অনুমেয় ছিল। তাই বলে ৫০তম! এটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি ছিল, জানালেন ইভা। এর ২২ দিন পর ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা। এদিকে এ নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই ইভার। কারণ, ততদিনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। শেষমেশ মায়ের পীড়াপীড়িতে পরীক্ষা দিলেন, কোনো ধরনের প্রস্তুতি না নিয়েই। অথচ এ পরীক্ষাতে ইভা ছাড়িয়ে গেছেন আগের ইভাকেও। মেধার দ্যুতি ছড়িয়ে তিনি সারাদেশের মধ্যে অর্জন করেন প্রথম স্থান।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সুবিধার্থে ঢাকায় এসে বসবাস শুরু করেন ইভা, সঙ্গে তার বড়বোন। এ সময়টাতে মা-বাবার অভাব ঘুচানোর সব রকমের চেষ্টা করেছেন বড় বোন আইরিন সুলতানা। একইসাথে মা-বাবা, শিক্ষকদের সমর্থন ছায়ার মতো ছিল ইভার জীবনে। তাই এই সাফল্যের পেছনে তাদের অবদানের কথা ইভা স্মরণ করেন আত্মতৃপ্তির সঙ্গে। মেডিকেলে ৫০ তম এবং ডেন্টালে প্রথম হওয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ইত্তেফাককে তিনি বলেন, খুবই ভালো লাগছে। এত এত শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের মধ্যে এত ভালো একটা রেজাল্ট করতে পেরেছি, তার জন্য আমি আনন্দিত। সৃষ্টিকর্তার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। বাবা-মা, শিক্ষকেরা যারা সবসময় আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় ছিলেন, তাদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ।
ইভার জন্ম মেহেরপুরের পিরোজপুরে। বাবা মো. ইউনুস আলী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের প্রভাষক, মা গৃহিনী। বাবার চাকরিসূত্রে ইভার শৈশব ও কৈশোর দুই-ই কেটেছে মুন্সিগঞ্জে। দুই বোনের মধ্যে ছোট ইভার পছন্দের কাজ ছবি আঁকা, বই পড়া, ভ্রমণ করা আর সেসবের ভিডিও ক্লিপস নিজের ইউটিউব চ্যানেলে (ইভা’স জোন) আপলোড করা।।