বর্তমানে মার্কারী দূষণের কারণে বাংলাদেশ-সহ আরো ১৪টি দেশের জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যা ভবিষ্যত আর্থিক সংকটের পূর্বাভাস। মার্কারী দূষণের ফলে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৮ থেকে ১৪৪ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গ্যানাইজশন-এসডোর সহযোগীতায় “দ্যা জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট”-এ প্রকাশিত এক নতুন গবেষণা পত্রের মাধ্যমে এই তথ্যটি জনসম্মুখে তুলে ধরা হয়। ৮ জুন আইপেন ও বায়োডাইভারসিটি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (বিআরআই) এর যৌথ উদ্যোগে এসডো-র প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিং-এর মাধ্যমে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ও এসডোর চেয়ারপার্সন, সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ গবেষণাপত্রটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেন।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমাণে ঢাকা শহর ও তার আশেপাশের এলাকার জনগণ প্রতিনিয়ত মার্কারী দূষণের শিকার হচ্ছে। এসডোর গবেষণা টিম এই আন্তর্জাতিক গবেষণায় গুরূত্বপূণ ভূমিকা রেখেছে। তারা ঢাকা শহরের মার্কারী দূষণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের চুলের নমুনা সংগ্রহ করে এবং পরীক্ষার জন্য পাঠায়। ঢাকা শহরের অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং আবাসিক এলাকার কাছাকাছি সিমেন্ট কারখানার উপস্থিতি এই শহরটিকে মার্কারী দূষণের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে। এ কারণে শহরে অবস্থিত জলাশয়সমূহ কারখানা, হাসপাতাল ও শহরের অন্যান্য বর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শহরের একটি নদীর নিকট দূরত্বে অবস্থিত সিমেন্ট কারখানার প্রাত্যহিক উৎপাদন ক্ষমতা ৭৪০০ মেট্রিক টন। মার্কারীর মিনামাটা কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এ সকল উৎস থেকে সৃষ্ট মার্কারী দূষণরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাংলাদেশ সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক।
এসডো মহা সচিব, ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা শহরের এই সমীক্ষার মাধ্যমে অন্যান্য শহরগুলি কি ভয়াবহ পরিমাণ দূষণের স্বীকার হচ্ছে তার একটি ক্ষুদ্র নমুনা আমরা দেখতে পাই। মার্কারী দূষণের যে চরম মূল্য আমাদের দিতে হচ্ছে, আশাকরি তা ভবিষ্যতে এই দূষণরোধে আমাদের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী করবে। তিনি আরও বলেন, “ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বসবাসকারীদের সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতি প্রতিরোধে মিনামাটা কনভেনশনকে অনুমোদন এবং সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন”।
সংগ্রহকৃত চুলের নমুনায় প্রাপ্ত মার্কারীর পরিমাণ ০.২ থেকে ২.৬৮ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। অর্ধেকেরও বেশী নমুনায় প্রাপ্ত মার্কারীর পরিমাণ ০.৫৮পিপিএম এর চেয়ে বেশী, যা কিনা মানবদেহে মার্কারীর সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা হিসেবে বিবেচিত।
“মার্কারী দূষণ বিশ্বব্যাপী মানব স্বাস্থ্য ও বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য এক গুরুতর হুমকি। তাই বিশ্বব্যাপী মানবজাতি ও পরিবেশকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে মার্কারী দূষণের উৎস নিরীক্ষণ করা অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ” আইপেন-এর বিজ্ঞান ও কারিগরি উপদেষ্টা পিএইচডি ড. জো ডিগাঙ্গি বলেন।
মার্কারী মানবদেহে প্রবেশ করলে এটি স্নায়ূতন্ত্র, কিডনি এবং হৃদতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাড়šত শিশু বিশেষত, গর্ভস্থ ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রসহ অন্যান্য সকল অঙ্গ এই দূষণের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্র¯ত হয়। বিভিন্ন জলাশয় বর্তমানে মার্কারী দ্বারা দূষিত হচ্ছে। এসকল জলাশয়ের দূষিত মাছ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছে এবং পরবর্তীতে মার্কারী দূষণ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত মার্কারী বাষ্পও মানবদেহে মার্কারী প্রবেশের অন্যতম কারণ।
আইপেন নেটওয়ার্কের জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলির প্রণিত প্রটোকল অনুযায়ী গবেষণায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোতে চুলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যা পরবর্তীতে বায়োডাইভারসিটি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (বিআরআই)-এ পরীক্ষা করা হয়।
আইপেন, বেসরকারী সংস্থাগুলির একটি নেটওয়ার্ক, যে সংস্থাগুলি বিশ্বের ১০০টিরো বেশী দেশে মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশকে রাসায়নিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে আসছে।
বায়োডাইভারসিটি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (বিআরআই) একটি অলাভজনক পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যার লক্ষ্য সহযোগীতামূলক গবেষনার মাধ্যমে বণ্যপ্রানী ও ইকোসিস্টেমের উপর ঝুকির পরিমাণ নির্ধারণ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ ফলাফলের মাধ্যমে সকলের মাঝে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে এই সচেতনতা মূলক বার্তা পৌঁছে দেয়া।
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীতে দেশে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন আসতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আজই হয়তো এর ডিক্লিয়ারেশন আসতে পারে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিভিন্ন টাইপের লকডাউন আসবে।’
সেটা কেমন হবে জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দারবানে যাওয়া আসা বন্ধ হবে। বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিক, ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশনা আসতে পারে। যেখানে জনসমাগম হয় সেসব জায়গায় রেস্ট্রিকশন আসতে পারে-এভাবেই বিভিন্ন ধরনের রেস্ট্রিকশন আসবে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ের প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ২২ দফার যে প্রোপোজাল গেছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেখে যেটা ভালো মনে করবেন সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকবে।’
প্রস্তাবানার মধ্যে আছে:
১. সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কমিউনিটি সেন্টার/কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে/জন্মদিন/সভা/সেমিনার ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।
২. বাড়িতে বিয়ে/জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা (ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫-এর অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০-এর অধিক নয়)।
৪. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার ও সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘বিটকরোনা’ নামের করোনা শনাক্তকারী কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা টুল তৈরি করেছে দেশি সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইজেনারেশন । তাদের দাবি, করোনাবট এবং এক্স-রে ইমেজ অ্যানালাইসিস টুল উন্নত উপায়ে ও দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না, তা নিজে থেকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
ইজেনারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবহারকারী নিজেই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাতে নিতে পারেন, এ জন্য ইজেনারেশন করোনাবটকে সেলফ-টেস্টিং টুলস হিসেবে তৈরি করেছে। এটি ব্যবহারকারীকে নিজে থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে আইসোলেশনে থাকতে উৎসাহ দেয়।
এটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময় বাঁচাতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন বুঝতে পারা এবং সেটির যথাযথ উত্তর দেয়ার জন্য করোনাবটটিতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়েছে। বটটি ইংরেজি, বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে ইংরেজি অক্ষরে লেখা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
এর পাশাপাশি ইজেনারেশন মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রে ছবি বিশ্লেষণী টুল তৈরি করেছে যা বুকের এক্স-রে ছবি দেখে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে কার্যকর হতে পারে। এই টুল ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সুস্থ আছেন কিনা, মৃদু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা অথবা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটি জানা যাবে। ইজেনারেশন বিটকরোনা (http://beatcorona.egeneration.co/) ওয়েবসাইটে গিয়ে এক্স-রে ছবি আপলোড করলে টুলটি ফলাফল দেখাবে
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘ইজেনারেশন বিগত দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার ও অ্যানালিটিক্স নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির যে সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই সল্যুশনগুলি আমরা স্বল্প সময়ে তৈরি করতে পেরেছি।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নারীসহ আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামাড়পাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের এক নারী ও জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা গ্রামের ৩০ বছরের এক যুবক।
আক্রান্ত ওই নারী ঢাকায় বোনের বাসায় এবং যুবক ঢাকায় জুয়েলারি দোকানে থাকতেন। ২৬ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান। এরমধ্যে তাদের ওই দুইজনের করোনা পজিটিভ ও চারজনের নেগেটিভ আসে বলে স্বাস্থ্যকর্মী এজাজুল হক হাসান রাত সাড়ে এগারোটায় জানিয়েছেন।
এর আগে ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের পলি ক্লিনিকের সিনিয়র ওটি বয় অখিল চন্দ্র সরকারের করোনা পজিটিভ হলে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে ২৪ এপ্রিল বাড়ি আসেন।
এ পর্যন্ত মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে ১৪৯ জনের করোনা নেগেটিভ ও ৩ জনের পজিটিভ আসে।
উপজেলা প্রশাসন রাতেই তাদের ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো এবং আশপাশের অর্ধশত বাড়ি লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
চিকিৎসক-নার্সসহ ৬৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী মরণব্যাধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সংগঠনটির মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে বাংলাদেশও গভীর সংকটের সম্মুখীন। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫২ জন।
এতে আরও বলা হয়েছে, করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সেবাদানকারীগণ আশঙ্কাজনকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২৯৫ জন চিকিৎসক, ১১৬ জন নার্স ও ২৪৯ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬০, যা দেশের মোট আক্রান্তের ১১ ভাগ।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবাদানকারী ব্যক্তিগণ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামীতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত প্রস্তাবনাসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় বিএমএ। এগুলো হলো:
১. দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সঠিক মানের পিপিই, এন-৯৫ বা এর সমমানের মাস্ক প্রদান করা জরুরি। ২. নন-কোভিড হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে ট্রায়াজ সিস্টেম চালু করে সেখানে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত পিপিই, এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক প্রদান নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। ৩. সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশে মহামাহারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৫২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯৭ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫২ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩১ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ সাত হাজার। তবে পৌনে নয় লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।