পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ডেন্টাল টাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। দুই দেশের মধ্যে একাডেমিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে এই নীতি পরিবর্তন আনা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা।

নতুন নীতির আওতায় এখন থেকে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরা ঢাবিতে পড়াশোনা করতে পারবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই পদক্ষেপ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়াবে।

অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা জানান, অতীতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলেও একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাবির দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ তৈরি করা।

“কোনো এক সময় পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তবে অনেক শিক্ষার্থী বৃত্তি বা একাডেমিক কনফারেন্সের জন্য পাকিস্তানে যেতে চায়। আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করেছি এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি,” বলেন তিনি।

এটি একেবারেই শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “১৯৭১ সালের গণহত্যা অস্বীকারের মতো রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো আলোচনা এর সঙ্গে জড়িত নয়। এটি শুধু একাডেমিক সহযোগিতা, রাজনৈতিক সংলাপ নয়।”

২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সে সময় অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেছিলেন, “যতদিন তারা গণহত্যা ও নৃশংসতার স্বীকৃতি না দেবে, ততদিন এই প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না। আমাদের শিক্ষার্থীরাও পাকিস্তানে পড়তে যাবে না, তাদের শিক্ষার্থীদেরও আমরা ভর্তি করব না।”

গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এক দশকের মধ্যে এটি ছিল কোনো পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের প্রথম সফর। এই কূটনৈতিক অগ্রগতি দুই দেশের মধ্যে নতুন একাডেমিক সম্পর্ক স্থাপনের পথ প্রশস্ত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সিন্ডিকেট সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন
এই সংবাদ নিয়ে আপনার মন্তব্য লিখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version