স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যথাযথভাবে কাজ করছেন না : সারজিস

ডেন্টাল টাইমস
ডেন্টাল টাইমস

বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম যথাযথভাবে কাজ করছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, তাঁর অফিস করার কথা হাসপাতালে, মন্ত্রণালয়ে নয়।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সাতটায় সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সারজিস আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে সক্রিয় উপদেষ্টা হওয়ার কথা ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। যে অফিস মন্ত্রণালয়ে করবেন না, হাসপাতালে করবেন। যে প্রত্যেকটা হাসপাতালে দৌড়ে বেড়াবেন। আমরা এই কথাটা বারবার বলেছি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও এ সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন, তাদের আমরা যেমন এক্টিভ দেখতে চাই, তেমনটা দেখতে পাই না।’

আহতদের দেখতে তাদের (সমন্বয়ক) বারবার হাসপাতালে ছুটে যাওয়ার বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। বলেন, ‘কেন আমরা এখনো এখানে আসবো? আজ দুই থেকে আড়াই মাস হয়ে যাচ্ছে, অথচ তারা বলছে সরকার থেকে কোনো সাহায্য পায়নি। একটা মন্ত্রণায়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা কি খুব বড় ব্যাপার? এই এক একটা মানুষকে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হলে কি খুব বেশি টাকা লাগবে! তাহলে কেন আমার আহত ভাইয়েরা এই কথাটা বললো?’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব প্রতিটা জায়গায় যেতে হবে। যারা আহত আছে তাদেরকে যাবতীয় সাহায্য প্রদান করতে হবে।’

এ ছাড়া যত দ্রুত সম্ভব আহতদের সাহায্যে গঠিত তহবিলকে প্রত্যেকটা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান সারজিস আলম।

হাসপাতালের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিদর্শনে আসছি শুনে কর্তৃপক্ষ দৌড়াদৌড়ি করে বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার করছেন, স্যাভলন দিচ্ছেন; এটা তো ২/১ দিনের কাজ না। এই কাজ করতে হতে হবে ৩৬৫ দিন।

রোগীদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্মচারীদের খারাপ ব্যবহার নিয়ে সারজিস আলম বলেন, হাসপাতালে যারা রুট লেভেলে কাজ করেন, বিশেষ করে যারা বেড শিট পরিবর্তন করেন, ক্লিন ও ড্রেসিং করেন তাদের ব্যবহার খুব খারাপ। সবচেয়ে বড় কথা একজন রোগী ভালো ব্যবহার পেলে অনেকটা ভালো হয়ে যান। তারা যদি তাদের দায়বদ্ধতা না বুঝেন, তাহলে তাদের কাজ করার দরকার নেই।

রোগীদের খাবার নিয়ে সারজিস বলেন, খাবার নিয়ে অভিযোগ করা হলো, একদিন ভালো খাবার দেয়, অন্যদিন আবার খারাপ দেয়। হাসপাতালে খাবারের ব্যবসা করবেন সমস্যা নেই, কিন্তু সেটা চুরির পর্যায়ে কেন যাবে?

এ সময় সারজিস আলম গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনে আহত রোগীরা কোথায় এবং কি অবস্থায় রয়েছে তা পরিদর্শন করেন। রোগীরা সারজিস আলমের কাছে অভিযোগ করেন, তাদের থাকার জায়গায় বেডশিট না ব্যবহার করে খবরের কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদেরকে সময়মতো খাবার দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অনেক সময় তাদের দেওয়া খাবার খেতে পারেন না।

সারজিস বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব সব জায়গায় শৃঙ্খলা আনতে হবে। যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন, তাদেরকে যাবতীয় সাহায্য প্রদান করতে হবে।’

সিআরপি হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেখেছি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। তাই আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের জন্য একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পের মাধ্যমে আহতের পুনর্বাসন ও তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এই লক্ষ্য আমরা বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে অর্থ সহায়তা চেয়েছি। সিআরপির কোনো নিজস্ব তহবিল নেই। ফলে আমরা চাইলেও এখানে ফাইভ স্টার সুবিধা দিতে পারবো না।’

এ সময় হাসপাতালে আহত রোগীদের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘স্বীকার করছি আমাদের এখানে সীমাবদ্ধতা আছে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও রোগীদের সেবায় আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। তাদের অভিযোগগুলো সমাধানে আমরা কাজ করবো।’

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

ডেন্টাল টাইমসে প্রকাশের উদ্দেশ্যে সংবাদ/লেখা পাঠাতে চাইলে নাম, ফোন নাম্বার এবং বিস্তারিত ছবিসহ আমাদের dentaltimesbd@gmail.com এ ই-মেইল করুন । এছাড়া, জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - বার্তাকক্ষ ০১৮৩৩৩৯১৫৮১

আমাদের প্রকাশিত সংবাদ নিয়মিত পেতে

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের Follow করুন​

এই সংবাদ নিয়ে আপনার মন্তব্য লিখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *