টানা বৃষ্টিতে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে পানি জমায় আজ সোমবারের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিতে হাসপাতালের নিচতলার তিনটি ওয়ার্ডে পানি জমে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে পানি জমে থাকায় সোমবারের ক্লাস ও পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালটির প্রবেশ ফটক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ভবন, কলেজ ফটক, ছাত্রীনিবাস ও ছাত্রাবাসেও পানি উঠেছে। ফলে সেখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছেন চিকিৎসক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির তোড়ে হাসপাতালের নিচতলায় প্রশাসনিক ব্লকের ২৬, ২৭ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে পানি ঢুকেছে। আগে থেকেই প্রস্তুতি থাকায় প্রশাসনিক ব্লকের কাগজপত্রের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে চাপ বেশি থাকায় মেঝেতে অবস্থান করা রোগীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন। প্রতিষ্ঠানটির পেছনে উত্তর পাশ ঘেঁষে প্রবাহিত ছড়ার পানি উপচে ক্যাম্পাস ও হাসপাতালে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনেরা বলেন, আজ সকাল থেকে হাসপাতালের নিচতলার ওয়ার্ডগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে মেঝেতে আশ্রয় নেওয়া রোগী এবং বাইরের বারান্দার মেঝেতে থাকা রোগীর স্বজনেরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব রোগীর জন্য আলাদা বিছানার ব্যবস্থা করে।
হাসপাতালের নিচতলার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন তারেক আহমদ বলেন, গতকাল রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের মেঝেতে কাপড় পেতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ওই সময় বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এরপর ভোরের দিকে হাসপাতালে হই-হুল্লোড় শুরু হয়। পরে নিচতলার কয়েকটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন, সেখানে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিচতলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ডে পানি ঢুকেছে। এতে চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। প্রাথমিকভাবে মেঝেতে থাকা রোগীদের শয্যায় তুলতে গিয়ে দুজনকে এক শয্যায় রাখতে হয়। পরে পৃথক শয্যা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কক্ষ এবং বারান্দাতেও পানি আছে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।