স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক পদে পদায়ন করা হলেও গত চারদিনেও অফিস এসে দায়িত্ব বুঝে নেননি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামীপন্থি অন্য চিকিৎসকদের মতো তিনিও গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে স্বৈরাচারের দোসর, বৈষম্যবাদী, নিপীড়ক ও অর্থ লোপাটের অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটিতে ডা. ফ্লোরাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) মহাখালীর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর হওয়ার পাশাপাশি তিনি যতরকম বৈষম্য, নিপীড়ন আছে স্বাস্থ্যের ভালো কর্মকর্তাদের ওপর চালিয়েছেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক লুটপাটেরও ভয়াবহ অভিযোগ আছে। কিন্তু আমরা দেখছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিতাড়ন করে তাকে নিপসমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনোভাবেই তাকে নিপসমে ঢুকতে দেব না। আমরা তাকে এ প্রতিষ্ঠান অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তিনি এর আগে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকার সময় প্রতিটি কর্মচারীর ওপর প্রচণ্ড নিপীড়ন চালিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করে দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় কথা, উনি খুনি হাসিনার দোসর, দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী ডা. দীপু মনির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। তার কোনো অধিকার নেই এ প্রতিষ্ঠানে অনুপ্রবেশের।
তিনি বলেন, খুনি হাসিনার এক সহযোগী ডা. সামিউল ইসলামকে সরিয়ে আরেক জুলুমকারীকে আমরা কোনোভাবেই মানব না। আমরা পিসি ডা. রুবেনা হকেরও পদত্যাগ দাবি করছি।
প্রশাসন কীভাবে চলবে জানতে চাইলে বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, নিপসমের মধ্য থেকে একজন সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও নিরপেক্ষ অধ্যাপক এ দায়িত্ব গ্রহণ করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা বাইরে থেকে কাউকে চাই না। আমরা খুনি হাসিনার কোনো দোসর চাই না।
এর আগে চিকিৎসকদের দাবির মুখে গত ২২ আগস্ট নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলামকে বদলি করে জনস্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। সেদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বদলি করে অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে নিপসমের পরিচালক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখনও তিনি নিপসমের দায়িত্ব বুঝে নেননি।
এসব প্রসঙ্গে জানতে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।